Women’s, World Cup, পারেননি সৌরভ গাঙ্গুলি- ঝুলন গোস্বামী, রিচার হাত ধরেই বাঙালির হাতে বিশ্বকাপ

আমাদের ভারত, ৩ অক্টোবর: সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা ঝুলন গোস্বামীর মত কিংবদন্তিরা যেটা পারেনি, সেটা পেরেছেন রিচা। বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখা দেখার সৌভাগ্য হয়নি সৌরভ, ঝুলনদের। আর বাঙালি হিসেবে সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা ঘোষ। ক্রিকেট দুনিয়ার একমাত্র বিশ্বজয়ী বাঙালি সে।

রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে জিতেছে ভারতীয় দল। রিচা ফাইনালে করেছেন ৩৪ রান। রানটা আহামরি না হলেও পরিস্থিতি অনুযায়ী রানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বিশ্বকাপ জিততে জীবন বাজি রাখতেও পিছপা হতেন না বলে জানিয়েছেন রিচা।

নাদিম ডি ক্লার্কের ক্যাচ হারমন প্রীত কর ধরার পরেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল আনন্দের বিস্ফোরণ। ভারত বিশ্বকাপ জয়ী। হরমোন প্রীত দু’হাত তুলে ডিপ কাভারের দিকে ছুটতে থাকেন। আর তখনই ধারাভাষ্যকার বলেন, এই একটা জয় গোটা দেশের মহিলা ক্রিকেটকে চাঙ্গা করে দেবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটা একটা বিরাট ব্যাপার, বাস্তবেও তাই হয়েছে।

রিচা জানিয়েছে, নিজেদের সেরা দেওয়ার পণ করে নেমেছিলেন তারা। তাঁর কথায়, সকলকে একটাই কথা বলেছিলাম, এটাই প্রতিযোগিতার শেষ দিন। নিজেদের মধ্যে যা আছে পুরোটা উজাড় করে দিতে হবে। নিজের শরীর শক্তির শেষ বিন্দু সমর্পণ করতে হবে। একে অপরের জন্য খেলব আমরা। সব উজার করে দাও এটাই ছিল আসল মন্ত্র।

কিন্তু এত বড় মঞ্চে নিজের সেরাটা দেওয়া কি চাপের নয়? উত্তরে রিচা বলেন, চাপ ছিল ঠিকই । মাঠে প্রচুর লোক এসেছিলেন। এই পরিবেশে আমরা খুব একটা খেলিনি। আমি নিজেকে বলেছিলাম অনেক পরিশ্রম করেছি, এবার নিজের উপর বিশ্বাস রাখার পালা। সকলে বিশ্বাস করেছিল যে আমি ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারি। আমাকে খুব সাহায্য করেছে সেটা। তিনি আরো বলেন, বিশ্বকাপ জয় আমাদের কাছে স্বপ্ন পূরণ। বহুদিন অপেক্ষা করেছি। স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হলো। আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কিরকম লাগছে সেটা বলতে পারবো না, সকলে আমাদের দেখছে। এটুকু বলতে পারি এই অনুভূতি বাকি সব কিছুর চেয়ে আলাদা।

মেয়ে বিশ্বকাপ খেলছে টেনশনে ঘুম উড়ে গিয়েছিল রিচার বাবা-মায়ের। সেমিফাইনালের আগে থেকেই তারা মুম্বাইতে গিয়ে থাকছিলেন। মাঠে ছিলেন। রবিবার ফাইনাল দেখেছেন গ্যালারিতে বসে। রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, কেমন অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। আমার মেয়ে এই জয়ে একটা রোল প্লে করেছে। সেটাই আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি। গোটা দলটা ভালো খেলেছে। তবে সন্তানের সাফল্য সবসময় বাবা-মা সব থেকে বেশি উপভোগ করে।

ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২৪ বলে ৩৪ রান। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৬ বলে ২৬। তার সঙ্গে দূরন্ত উইকেট কিপিং। রিচা বাড়ি ফিরলে কেমন উদযাপন হবে জমিয়ে, খাওয়া দাওয়া হবে নিশ্চয়ই? রিচার বাবা বললেন, খাওয়া-দাওয়া কী হবে, তা ওর মা ঠিক করবে। ওকে নিয়মের মধ্যে থাকতে হয়।একটা দুটো দিন নিয়মের বাইরে যেতে পারে। ওর মায়ের হাতের ফ্রাইড রাইস হবে, ও ভালোবাসে খুব। তারপর আবার নিয়মে বাধা জীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *