নীল বণিক, আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৭ অক্টোবর: বিসর্জনের দিনই সংঘাত বিসর্জন দিয়ে রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সমঝোতা করার মরিয়া চেষ্টা করলেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করে বিজয়ার প্রণাম করলেন তাঁকে।
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সংঘাতের মূল কারণ যুব মোর্চার জেলা কমিটি বাতিল করা নিয়ে। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সভাপতির সঙ্গে আলোচনা না করেই বিজেপি যুব মোর্চার বিভিন্ন জেলা কমিটি ঘোষণা করে দিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। সেই তালিকা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয় বিজেপি কর্মী মহলে। অভিযোগ উঠেছিল, তৃণমূল থেকে আসা নতুনদেরই সেই তালিকায় সংখ্যাধিক্য অথচ বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মীদের সেখানে জায়গা হয়নি। এরপরই দিলীপ ঘোষ সমস্ত জেলা কমিটি বাতিল করে এক নির্দেশিকা জারি করেন। তার পরই সৌমিত্র খাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়। সৌমিত্র খাঁ জানিয়ে দেন, তিনি যুব মোর্চা সভাপতির পদ থেকে সরে যাবেন কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই আবার রণে ভঙ্গ দিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তবে ভিডিওবার্তায় তিনি প্রচ্ছন্নভাবে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যুদ্ধ জারি রেখে ছিলেন। বিজয়ার দিন দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করে সেই সংঘাতে ইতি টানার চেষ্টা করলেন বলে মত বিজেপি নেতাদের একাংশের।
গতকাল বিকেলে সৌমিত্র খাঁ রাজারহাটে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজয়ার শুভেচ্ছা জানানোর আছিলায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চ্যাটার্জি। দুইজনের জন্যই তিনি পাঞ্জাবি এবং মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে যান। প্রথমেই দিলীপ ঘোষের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। এরপরই দিলীপ ঘোষকে পাঞ্জাবি ও মিষ্টির প্যাকেট উপহার দেন। রাজ্য বিজেপির সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চ্যাটার্জিকেও একইভাবে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানান সৌমিত্র খাঁ। এরপর রাজ্য বিজেপির দুই কান্ডারীর সঙ্গে খোশমেজাজে গল্প করেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি।
দিলীপ ঘোষ যুব মোর্চার জেলা কমিটি বাতিল করার পর সৌমিত্র খাঁ রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও কেন্দ্রীয় নেতা শিব প্রকাশের কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। পরামর্শ করেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এত কিছু করার পরেও কারও থেকে কোনও সহযোগিতা না পেয়ে সৌমিত্র খাঁ বুঝে যান সংঘাতে গিয়ে কোনও লাভ হবে না। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, রাজনীতিতে সবসময়ই সৌমিত্র খাঁ ঠিক সময়ে ডিগবাজি খেতে পারেন। তাই এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করার পর সৌমিত্র খাঁ জানিয়েছেন, সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাংলার পরিবর্তনের জন্য যুব মোর্চা এক হয়ে আগামী দিনে লড়াই করবে।