আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর: পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে পুজো। এই তো সিঁড়ি। শুদ্ধ ভাষায় সোপান। ধাপে ধাপে উঠে যাচ্ছে ওপরে।
শুধুই কি উঠে যাওয়া! নামতে গেলেও সেই সিঁড়ি। সেই সোপান। সে জীবনপথের পথিক হোক বা সাপলুডো খেলা। আমরা সবাই তো উঠতে চাই। আরেকটু ভালো, আরও একটু ওপরে কোথাও। কাজের পদোন্নতি থেকে যশের ব্যাপ্তিতে, কোণের অন্ধকার থেকে মনের আলোয়।
সিঁড়িও তো কতরকম! সোজা সিঁড়ি, ঘোরানো সিঁড়ি, সাদামাটা সিঁড়ি, সাজানো সিঁড়ি। কখনো কুসুমাস্তীর্ণ, কখনো কন্টকাকীর্ণ। উঠতে উঠতে হাঁপিয়ে গেলে একটু জিরোনো। আবার চলা। নিত্যদিনের নৈমিত্তিক জীবনের মলিনতা ফেলে,
একটু উঠে একটু নেমে
একটু সেজে একটু ঘেমে
একটু চলে একটু থেমে
ধাপে ধাপে উত্তরণের অন্বেষণ।
‘আই উইল গো টু দ্য টপ দ্য টপ দ্য টপ’।
জীবনখাতার প্রতি পাতায় সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের সব হিসেব নিকেশ মিলিয়ে, খ্যাতির শীর্ষে উঠতে, নায়ক হতে কে না চায়! একদিন কমল মিত্রের সঙ্গে মতবিরোধে এই সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসেছিলেন উত্তমকুমার, প্রাণ দিয়ে গান ভালবেসে। আবার একদিন তরতরিয়ে উঠে গিয়েছিলেন অজস্র সোপান পেরিয়ে, অন্তরের ভালবাসায়, সুচিত্রা সেনের দিকে। একদিন এই সিঁড়ির বাঁকেই আচমকা দেখা হয়ে যায় স্বপ্নের সঙ্গে সাফল্যের, বাস্তবের সঙ্গে স্মৃতির, ভালো লাগা ছুঁয়ে থাকে ভালোবাসার হাত।
সিঁড়ির তলার অন্ধকার ধাপে ধাপে অতিক্রম করে, জীবন পা রাখুক আলোর সোপানে। সব চাওয়ার সব পাওয়ার শিখরে, জীবনের চরম প্রাপ্তি যেখানে পরমে বিলীন, সেইখানে বিরাজমান সচ্চিদানন্দময়ী, চিরশান্তিপ্রদায়িনী মা। আজ এখানে ধাপে ধাপে সেই সোপান বেয়ে চলুন এগিয়ে যাই মাতৃরূপ সন্দর্শনে। যেখানে প্রার্থনা নিবেদনে, অঞ্জলি প্রদানে ভক্তরা আকুল।
ওই শোনো মায়ের আহ্বান, ওই বেজে উঠল শঙ্খ ঘন্টা, ওই তো ধ্বনিত হল মঙ্গলমন্ত্র। উঠতে উঠতে সোপান বেয়ে জীবনপথের শারদ-বাঁকে, সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্কে মিলেছি আজ মায়ের ডাকে! চলছে শেষ মুহূর্তের মণ্ডপ সাজানোর কাজ। পুজোর থিম সোপান।