আমাদের ভারত, ১৩ আগস্ট: ভারতের নাগরিক হবার অনেক আগেই ভোটার তালিকার নাম উঠে গিয়েছিল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্কের আবহাওয়ায় এমনটাই অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বুধবার দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডেল এই অভিযোগ এনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমন শানিয়েছেন বিজেপির আইটি সেলের সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য।
বিজেপি নেতার দাবি, আজ থেকে ৪৫ বছর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আঁতাত করে ভোটার জালিয়াতি করেছেন সোনিয়া গান্ধী। অভিযোগ, সেই সময় তিনি ভারতের নাগরিক হননি। কিন্তু তার আগেই অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় নাম উঠে গিয়েছিল তাঁর।
নিজের দাবির স্বপক্ষে প্রামাণ্য নথিও দিয়েছেন অমিত মালব্য। ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকার একটি ছবি পোস্ট করে অমিত মালব্য দাবি করেছেন, যে ওই বছর ভোটার তালিকায় সোনিয়ার নাম ছিল, অথচ তখনও সোনিয়া গান্ধী ভারতের নাগরিকত্ব পাননি। এর পরেই তিনি লেখেন, এটি যদি নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন না হয় তাহলে আর কী?
১৯৪৬ সালে ইতালিতে জন্ম সোনিয়া গান্ধীর। বাবার দেওয়া নাম ছিল সোনিয়া মাইনো। ১৯৬৮ সালে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বিবাহের পর গান্ধী পরিবারের অংশ হয়ে ওঠেন ইতালির মেয়ে। বিজেপির দাবি, ১৯৮০ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রথম বার ভোটার তালিকায় নাম ওঠে সোনিয়ার। সেই সময় গান্ধী পরিবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকারি বাসভবনে থাকত।
বিজেপির আরও দাবি, ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সোনিয়ার নাম ভোটার তালিকাভুক্ত ছিল, অথচ তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান ১৯৮৩ সালে। এই তথ্য প্রমাণ প্রকাশ্যে এনে অমিত মালব্য লেখেন, এটা স্পষ্ট ভাবেই আইনের লঙ্ঘন। ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে গেলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হয়। ১৯৮২ সালের বিতর্ক ও সমালোচনায় নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর তার নাম কি তালিকাভুক্ত হয়? অমিত মালব্যর দাবি, সোনিয়ার নাম যখন দ্বিতীয়বার ভোটার তালিকায় ওঠে তাতেও একাধিক অসঙ্গতি ছিল। ১৯৮৩ সালের ১ জানুয়ারির আগে নাগরিকত্ব পেলে তবেই সে বছর নাম ওঠার কথা, অথচ সোনিয়া গান্ধী ভারতের নাগরিক হন ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে।
অমিত মালব্যর এই বক্তব্যের পর সরব বিজেপির একাধিক নেতা ও মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ রাহুল গান্ধী এনেছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং ভুল পরিসংখ্যান।
বিজেপির সব দাবির পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেস। বিহারের কংগ্রেস সাংসদ তারিক আনোয়ার বলেন, এর জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। সোনিয়া গান্ধী ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ করেননি। নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন কর্তারা নিজেরা তা করেছিলেন। তারিকের কথায়, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং সাংবিধানিক সংস্থা। সেই সময় নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল। এরপর পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেস নেতা বলেছেন, আমরা দেখছি যে আজ নির্বাচন কমিশন বিজেপির একটি অংশ হয়ে উঠেছে এই দূরবস্থা থেকে তাদের দ্রুত বেরিয়ে আসা উচিত।