সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৭ মে: হাসপাতালের ভিতর জলে থৈ থৈ। একদিকে নোংরা জল সারা মেঝেতে, অপরদিকে ছাদ ও দেওয়াল চুঁয়ে পড়ছে জল। ফলে ফের বিতর্কের মুখে সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতাল। এক পশলা বৃষ্টিতেই জলে ভাসছে হাসপাতাল। জলে ভাসছে বাক্স বাক্স ওষুধ ও গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী। রোগী ও পরিজনদের বেঞ্চের ওপর পা তুলে বসে থাকতে দেখা যায়। এরকমই একটি ছবি সোমবার বৃষ্টির পর ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের ঝড় ওঠে এলাকায়।
এই হাসপাতালে পেটের ব্যাথা নিয়ে দেখাতে আসা কল্যাণপুরের রমেন চক্রবর্তী বলেন, সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালের তদারকিতে আরও জোর দেওয়া দরকার। একপশলা বৃষ্টিতেই যদি হাসপাতালের এই অবস্থা হয় তবে বর্ষায় চরম সমস্যায় পড়তে হবে সকলকে।
উল্লেখ্য, সোমবার ভারী বৃষ্টির ফলে হাসপাতালের বর্হিবিভাগে জল ঢুকে পড়ে। মেঝে দিয়ে বয়ে যেতে দেখা যায় নোংরা জল। সেই নোংরা জলে ভিজে যায় সেখানে রাখা ওষুধের বাক্স। বর্হিবিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাদের পরিজনকে সেই নোংরা জল থেকে বাঁচতে বেঞ্চের ওপর পা তুলে বসে থাকতে দেখা যায়। রমেনবাবু ছাড়াও অন্য রোগী ও তাদের পরিজনজদের অভিযোগ, সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে এমন ঘটনা অনেকবারই ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমে খবরও হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ ও দেওয়ালের ফাটা অংশ দিয়ে জল পড়ে হাসপাতালের বর্হিঃবিভাগে। এমনকি নর্দমার নোংরা জলও ঢুকে যায়। এতে চরম সমস্যায় পড়তে দেখা যায় রোগী ও তাদের পরিজনদের। অথচ সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল সোনামুখী ব্লকের ১০টি ও পাত্রসায়র ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ। কিন্তু সেই হাসপাতালের পরিকাঠামোর বেহাল অবস্থা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক বলেও অভিযোগ তাদের।
উল্লেখ্য, গত বছর এই গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে এক সদ্যোজাতকে একটি কুকুর মুখে করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে এরকম একটি ছবি নেটে ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসীরা। এনিয়ে তোলপাড় হয়েছিল সারা জেলা। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা তড়িঘড়ি হাসপাতালে তদন্তে যান। সেখানকার পরিকাঠামোতে নজরদারি ও উন্নয়নের আশ্বাস দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ভেবেছিলেন যে, এবার হয়তো হাসপাতালটির পরিকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণ আগের থেকে উন্নয়ন হবে। কিন্তু এবার সেই হাসপাতালের আরও এক ভয়ঙ্কর ছবি ধরা পড়ে। মেঝে ডুবে নোংরা জলে, ভাসছে ওষুধ, পা ডুবে যাচ্ছে রোগীদের। রোগী ও তাদের পরিবারের লোকজনকে পড়তে হচ্ছে কঠিন পরিস্থিতির মুখে।