সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৯ জুন: রামপুরহাটের পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দু ট্রাক পাথর নিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে সোনামুখী থানার পুলিশ মূল অভিযুক্তকে নিমতা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। আজ তাকে বিষ্ণুপুর আদালতে পেশ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রামপুরহাটের পাথর ব্যবসায়ী চন্দন সিং- এর কাছে গত ২৮/১১/২০২৪ তারিখে ফোন মারফত সোনামুখী থেকে দুই ট্রাক পাথরের অর্ডার আসে। তারপরের দিন তিনি দুই ট্রাক পাথর সোনামুখীতে পাঠান। মাল ডেলিভারি হওয়ার পর পেমেন্টের জন্য ফোন করলে ফোন সুইচ অফ পাওয়া যায়। পরে তিনি জানতে পারেন যে, ঐ ব্যক্তি তার কাছ থেকে পাথর নিয়ে সোনামুখীতে অন্য দুই ক্রেতাকে বিক্রি করে ৯৪,০০০/- টাকা পেমেন্ট নিয়ে চম্পট দিয়েছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮/১২/২০২৪ তারিখে চন্দন সিং ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে সোনামুখী থানাতে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে যে গাড়িতে করে প্রতারক টাকা নিতে এসেছিল সেই গাড়ির দুই চালক বাঁকুড়া নিবাসী পাপাই সূত্রধর ও অনিমেষ রায়’কে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, প্রতারক তাদের ভাড়া করেছিল শুধুমাত্র পেমেন্টের টাকাটি তার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং সেই মতো তারা দক্ষিণেশ্বরে সুনীল কুমার হাজরা নামে এক ব্যক্তিকে ওই টাকাটি দিয়েছিলেন।
পরবর্তী ক্ষেত্রে গত ৭/৫/২০২৫ তারিখে নিমতা থানা এলাকা থেকে সেখানকার নিবাসী পেশায় টোটো চালক সুনীল কুমার হাজরাকে গ্রেথতার করা হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, তাকেও মূল অভিযুক্ত তথা এই কেসের মাস্টারমাইন্ড রায়বাবু ভাড়া করেছিলেন। মাধ্যম হিসেবে কাজ করে প্রতারণার টাকা উপরিউক্ত দুই চালকের কাছ থেকে নিয়ে তাকে দেওয়ার জন্য।
দীর্ঘদিন ধরে নজরদারি এবং প্রচেষ্টায় অবশেষে গতকাল ১৮/৬/২৫ তারিখে মূল অভিযুক্ত তথা মাস্টারমাইন্ড শিবু মুখার্জি ওরফে রায়বাবুকে নিমতা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ফোন ও ৪৩৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তিনি টুর অ্যান্ড ট্রাভেলস- এর একটি সংস্থা চালাতেন। সেই সূত্রে বিভিন্ন হোটেল এবং ব্যবসায়ীদের নাম্বার তার কাছে আছে। বিভিন্ন পাথর ব্যবসায়ীদের ফোন করে তিনি পাথরের অর্ডার দেন এবং সেই পাথর হ্যান্ডওভার হওয়ার আগেই তিনি আবার অন্য ক্রেতাদেরকে বিক্রি করে সেই পাথরের টাকা আত্মসাৎ করেন। বিগত তিন বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় তিনি এই রকম ভাবে বহু পাথর ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। আজ তাকে বিষ্ণুপুর আদালতে পেশ করা হয়।