আমাদের ভারত, ১৫ জানুয়ারি: বাঘা যতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে বহুতল হেলে পড়ার ঘটনায় শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক টানাপড়েন। এই ঘটনার দায় বাম আমলের ঘাড়ে ঠেলার চেষ্টা করেছেন যাদবপুরে তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার সহ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু এই গোটা ঘটনায় কলকাতার মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায় তৃণমূলের লোভের জন্য কিছু মানুষের প্রাণ যাচ্ছে।
এই ঘটনায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, এটা নতুন কিছু নয়।বছর বছর এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে, এটা কেন হচ্ছে সেটা সবাই জানে। আমাদের কলকাতা কর্পোরেশন থেকে শুরু করে অন্যান্য যে কর্পোরেশনগুলো আছে সেই প্রত্যেকটা কর্পোরেশনে একটাই নীতি চলে। ফেলো করি মাখো তেল। আপনার যে কোনো ধরনের প্ল্যান সব পাশ হয়ে যাবে। তৃণমূলের লোভের জন্য মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। মেয়রের পদত্যাগ করা উচিত। এত বড় কনস্ট্রাকশন হচ্ছে কাউন্সিলর পয়সা পাইনি এটা মেনে নিতে হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত ঐ কাউন্সিলরকে কান ধরে জেলের ভেতরে ঢোকানো। কিন্তু উনি ঢোকাবেন না সেটাও আমি জানি।
সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, দায়িত্ববান পৌরসভার কর্মীদের তত্ত্বাবধানে বাড়ি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে গোটা বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হবে। সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ওখানে রয়েছেন। কলোনি এলাকায় নিজেরাই বাড়ি করে নিয়েছেন অনেকে। কোনো প্ল্যান না করেই। এই পাপের বোঝা আমাদের নয়, বাম আমল থেকে চলছিল। এখন সেটা আমাদের বইতে হচ্ছে। বাম আমলে তো অনলাইন বলে কিছু ছিল না। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি তখন ঐসব ফাইল কিছু পাচ্ছি না। আমরা দায় চাপাচ্ছি না। বাম আমলে শুরু করেছিল সেই অভ্যাস তো রয়ে গেছে। সেই সময় কঠোর হলে আজ এসব হতো না। অনেক ভুল প্ল্যান মঞ্জুর হয়েছে, এখন সব ন্যাকা সেজে কী হবে?
কিন্তু সুকান্ত মজুমদার বলেন, যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন। কলকাতা পৌরসভার আওতাধীন এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণ রয়েছে, অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর কাউন্সিলর টাকা নেন। এত বড় একটা বিল্ডিং হয়ে গিয়েছে আর সেখানকার কাউন্সিলাররা জানেন না। আমরা ঘাসে মুখ দিয়ে চলি?
প্রসঙ্গত, দুপুরে কলকাতার বাঘাযতীনে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছে বহুতল। আর তাতে শিউরে উঠেছে রাজ্যবাসী। বহুতলটি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরসভা। এর ফলে বহুতলের বাসিন্দাদের মাথায় হাত। মঙ্গলবার দুপুরে আচমকাই ওই বহুতলটি হেলে পড়ে। স্থানীয়দের দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে বহুতলটি হেলে পড়তে শুরু করেছিল। প্রোমোটারকে বিষয়টি জানাতে জ্যাক লাগিয়ে বাড়ির ভিত থেকে উঁচু করে সোজা করার জন্য এক সংস্থাকে বরাদ্দা দেন তিনি। কাজ চলায় বহুতলটি খালি করে আবাসিকদের ভাড়া বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার মেরামতির কাজ চলার সময় হেলে পড়া বহুতলটি ভেঙ্গে পড়ে। বহুতলের বাসিন্দাদের একাংশ ও এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ, জলা জমির উপরে বহুতলটি নির্মাণ হয়েছিল, তাই এই পরিণতি।