আমাদের ভারত, ১৫ এপ্রিল: নববর্ষের দিন সকাল বেলায় লকডাউনের মেয়াদ দ্বিতীয় ধাপে ১৯ দিন বাড়িয়েছে কেন্দ্র সরকার। বারবার সরকারি নির্দেশে জোর দিয়ে বলা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। তার মধ্যে বুধবার হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলেছেন দফায় দফায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ২০২২ সাল পর্যন্ত। আর তা না হলে এক বিরাট সংখ্যক মানুষ এই মহামারীতে আক্রান্ত হবেন। হাসপাতালেও ঠাঁই হবে না তাদের। বিরতি দিয়ে দিয়ে লকডাউনও প্রয়োজনে চালাতে হতে পারে বলে মনে করছেন তারা
করোনার মত মারণ ভাইরাস গত মাসে যেভাবে ছড়িয়েছে তা দেখেই বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। হাভার্ডের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করেছেন তাদের একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক জার্নালে। তাতে বলা হয়েছে, আগামী সময় বেশ কিছু নির্দিষ্ট ঋতুতে ইনফ্লুয়েঞ্জার মত একাধিকবার ফিরে আসতে পারে করোনা। ওই রোগ সাধারণ সর্দি-কাশির চেয়ে অনেক বেশী ছোঁয়াচে।
তারচেয়েও বড় কথা আমরা এখনই রোগটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানি না। একবার যদি কেউ এই রোগে সংক্রমিত হয়, তাহলে তার শরীরে কি ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায়, কিংবা সেই ক্ষমতা কত দিন বজায় থাকে তারা কিছুই জানিনা আমরা। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের অন্যতম স্টিফেন বলেন, “আমরা যতটা জানতে পেরেছি কিছুদিনের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যথেষ্ট নয়। আমেরিকার চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভবিষ্যতে দফায় দফায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। করোনার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তাই রোগ ঠেকাতে বারেবারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই একমাত্র পথ। ভবিষ্যতে যখনই এই রোগটি ফের ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে তখনই আবার র্যাপিড টেস্ট করার প্রয়োজন।
তবে করোনার ভ্যাক্সিন তৈরি হলে লকডাউনের সময়সীমা কমানো যেতে পারে। লক ডাউনের সময় কিছু ছাড়ো দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যতদিন না ভ্যাকসিন বেরোচ্ছে ততদিন মাঝে মাঝেই লক ডাউন চালিয়ে যেতে হবে। আর যখনই ছাড় দেওয়া হবে তখনই বাড়বে রোগীর সংখ্যা। মাঝে মাঝে লকডাউন হলে হাসপাতালগুলিতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ক্ষমতা বাড়াতে পারবে।
অন্যদিকে দীর্ঘ লকডাউনের এর বিরোধিতা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সময় জনসাধারণের মধ্যে কোন প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় না। আর সেই কারণেই লকডাউনে মাঝেমাঝে ছাড় দিতে হবে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণাপত্র স্পষ্ট লিখেছেন, “আমরা নিশ্চিত এই রোগটা এখন পৃথিবীতে থাকতে এসেছে। এর আগে বিশ্বজুড়ে সার্স ছড়িয়ে পড়লেও তা এখন নেই। তবে করোনার ক্ষেত্রে তেমন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।