রাহুলদার সঙ্গে চায়ের আড্ডায় বসলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে: অনুপম

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ২৭ সেপ্টেম্বর: শনিবার বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই কমিটিতে কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির পদ পেয়েছেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য হিসেবে খ্যাত মুকুল রায়। পাশাপাশি সর্ব ভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা একদা তৃণমূল নেতা অনুপম হাজরা। বিগত লোকসভা নির্বাচনের আগে অনুপম তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে গত লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্ধীতাও করেছেন। কিন্তু জিততে পারেননি। তবে ভোটে না জিতলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গে বিজেপির সংগঠন আরও মজবুত করতে অনুপমের উপরেই ভরসা রেখেছেন। বাদ পড়েছেন এরাজ্যের একদা বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তেই শনিবার সন্ধ্যায় দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাহুল। তৃণমূলের লোকেরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবেন বলেই তাঁকে সেই কমিটিতে রাখা যাবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাহুল। যদিও রাহুলের রাগ এক কাপ চায়েই ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন অনুপম। রবিবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলা কার্যালয় বারুইপুরে এসে একথা বলেন অনুপম।

এদিন কামালগাজি মোড় থেকেই বিজেপি কর্মীরা অনুপমের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ অনুপমের গাড়ি সেখানে এলে তাঁকে নতুন দায়িত্বের জন্য সম্বর্ধনা জানান বিজেপি কর্মীরা। সেখান থেকেই বাইক র‍্যালি করে তাঁকে দলীয় কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে রওনা দেন বিজেপি কর্মীরা। এদিন দলীয় কার্যালয়ে এলে তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপির জেলা সভাপতি হরিকৃষ্ণ দত্ত। তাঁকে ফুল, মালা দিয়ে বরণ করে নেন দলের অন্য কর্মীরা। এরপরেই কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন অনুপম। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কিভাবে দলের কর্মীরা কাজ করবেন, কিভাবে সংগঠনকে আরও মজবুত করবেন তা নিয়েই মূলত এদিন আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুপম বলেন, “ দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি তৈরি হয়েছে। রাহুলদা নিজেও দলের সিস্টেম সবই জানেন, উনি দীর্ঘদিনের কর্মী, আশাকরি সব সমস্যা ভুলে একসাথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হবেন। ওনার সাথে এককাপ চায়ের আড্ডায় বসলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ওনার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক।” কলকাতায় এলে রাহুল সিনহার সাথে কথা হয় আড্ডা হয় বলে জানান তিনি।

এর পাশাপাশি এদিন অনুপম আরও বলেন, “এবার এ রাজ্য থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করতেই হবে। ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত সর্বদা দলের সংগঠনের জন্য কাজ করে যাবো। কেন্দ্র যে আস্থা আমার উপর দেখিয়েছেন তা যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করবো।”

এদিন দলীয় কার্যালয়ে বিজেপি কর্মী, সমর্থক পরিবৃত হয়ে আসেন অনুপম। সেখানে শারীরিক দূরত্বের বিধিনিষেধ মানা হয়নি, অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। এ প্রসঙ্গে অনুপম আরও বলেন, “ আমরা করোনার থেকে আরো বড় ভাইরাস মমতা ভাইরাসের সাথে লড়াই করছি। ঐ ভাইরাসকে এ রাজ্য থেকে আগে তাড়াতে হবে। আর আমার যদি করোনা হয়, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরবো। করোনায় মৃত মানুষগুলির সাথে ও তাদের পরিবারের সাথে কুকুরের মতো ব্যবহার করেছে এই সরকার। তাই এদেরকে তাড়াতেই হবে।” অনুপম দলের নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় খুশি বিজেপির যুব কর্মীরা।

বারুইপুর পূর্ব জেলার সভাপতি হরিকৃষ্ণ দত্ত বলেন, “ অনুপমের মতো তরতাজা যুবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সুযোগ পেয়েছে। আমরা খুশি এরকম তরতাজা যুবক দলের সংগঠনকে আরও অনেক বেশি মজবুত করতে পারবে। আমরা সকলেই এই সর্বনাশা তৃণমূলকে এ রাজ্য থেকে বিতারিত করেই ছাড়বো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *