লকডাউনে ৬৮ হাজার মানুষের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করল সিংহবাহিনী, সাহায্যের হাত দিল্লি, পাকিস্তানেও

আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৭ এপ্রিল: দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় ৬৮ হাজারের বেশি মানুষের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে সিংহবাহিনী। শুধু রাজ্যেই নয় সাহায্য করেছে দিল্লি এবং গুরগাঁও এ আটকে পড়া শ্রমিকদের। এছাড়া পাকিস্তানের অসহায় হিন্দুদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। মানুষের পাশাপাশি রাস্তার কুকুরদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে সিংহবাহিনী।

লকডাউনে চরম অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন মানুষ, বিশেষ করে দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের অন্নসংস্থান করাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্যে উত্তর এবং দক্ষিণ বঙ্গ মিলিয়ে ১৮টি জেলাতে সেই সব পিছিয়ে পড়া মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সিংহবাহিনী। ইতিমধ্যে তারা ৬৮ হাজার তিনশো কুড়ি জন মানুষের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অবস্থা বুঝে এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আবার কোনও পরিবারকে পাঁচদিনের রেশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এই রেশন এর মধ্যে চাল, ডাল, আলু, চিনি, সোয়াবিন, তেল এবং রান্নার বিভিন্ন মসলা রয়েছে।

এছাড়া রাজ্যের বহু শ্রমিক বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন। এদের মধ্যে দিল্লি এবং গুরগাঁও তে বহু শ্রমিক রয়েছে। সিংহবাহিনীর সভাপতি দেবদত্ত মাজি জানান, দিল্লি এবং গুরগাঁও–য়ে ২৬টি হিন্দু পরিবারকে পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের ২৫ কেজি চাল, ১০ কেজি আটা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছে।

শুধু রাজ্য এবং দেশেই নয় তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্থানে বসবাসকারী দরিদ্র হিন্দুদের জন্য। দেবদত্ত মাজি জানান, এদের সাহায্য করার জন্য অনাবাসী ভারতীয়র নিয়ে একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। সেই ফান্ডের টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের হিন্দুদের কাছে। ইতিমধ্যে প্রায় আড়াইশো জন হিন্দুকে সাহায্য করা হয়েছে।

শুধু নয় এর পাশাপাশি সিংহবাহিনীর সক্রিয় মহিলা কর্মীরা ৫০০০ মাস্ক তৈরি করেছেন। সেই মাক্স মাস্ক কলকাতা এবং বর্ধমানের বিলি করা হয়েছে।

লকডাউনে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কুকুররা খাবারের অভাবে ধুঁকছে। অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে তাঁদের দিকে। সিংহবাহিনীও এই কুকুরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে। দেবদত্ত মাজি জানান, কলকাতায় প্রায় দুশো কুকুরের খাবারের জন্য প্রতিদিন রান্না করা হচ্ছে, বিশেষ করে উত্তর কলকাতায় সেই খাবার বিলি করা হচ্ছে।

এছাড়া পুরুলিয়ায় বিস্কো আয়রন এন্ড স্পঞ্জ কারখানায় ৩০ জন শ্রমিক তাঁদের বকেয়া পাচ্ছিলেন না। তারা দেবদত্তবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর এই সংগঠনের সহ-সভাপতি স্নেহাশীষ মণ্ডলের উদ্যোগে ওই কোম্পানিএবং পুলিশের মধ্যস্থতায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া দিতে রাজি হয়।

দেবদত্তবাবু জানান, লকডাউনের ফলে বিভিন্ন জায়গায় সাহায্যের জন্য একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে চালএবং আটা কিনতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক নানা রকম বাধা রয়েছে। সেই বাধা ডিঙিয়ে তাদের কাজ করতে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *