জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২ নভেম্বর: গত কয়েক মাস দল থেকে ডানা ছাঁটার পর কোনও সরকারি মঞ্চে দেখা যায়নি শুভেন্দু অধিকারীকে। অংশ নেননি তৃণমূল- কংগ্রেসের কোনও অনুষ্ঠানেও। যা থেকে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তৈরি হয় তবে কি শুভেন্দুর দলবদল শুধু সময়ের অপেক্ষা? এই জল্পনায় যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় ঠিক তখনই গত শনিবার নন্দীগ্রামের এক অরাজনৈতিক বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান মঞ্চে শুভেন্দু তার অনুগামীদের নিজের মুখ থেকে কিছু না শোনা পর্যন্ত বাজারি খবরে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তার ঠিক পরের দিনই অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের এক সরকারি অনুষ্ঠানে দেখা গেল শুভেন্দুকে। যা থেকে ফের রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। তবে কি দলের বিশ্বস্ত সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল- কংগ্রেসেই থাকছেন? এই প্রশ্নও রবিবারের সন্ধ্যের পর থেকে ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে।
মাস তিনেক আগে আগে ঝাড়গ্রামে আয়োজিত সরকারি হুল দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এবং ঝাড়গ্রাম শহরে উপস্থিত থেকেও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে উপস্থিত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উল্টে একই সময় ঝাড়গ্রাম সংলগ্ন একটি গ্রামে আদিবাসীদের লঅন্য একটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল শুভেন্দুকে। যা থেকে শুরু হয় জল্পনা। এরপর তুমুল জল্পনার মাঝে এবার নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দুকে দেখা গেল সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে। রবিবার সন্ধ্যেয় হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অর্থানুকূল্যে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের হোসেনপুর ব্রিজ থেকে রাজারামচক শিক্ষানিকেতন পর্যন্ত বসানো পথবাতির উদ্বোধন করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিধায়িকা ফিরোজা বিবি, উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক পি হরিশঙ্কর প্রমুখ।
এদিন শুভেন্দু মঞ্চ থেকে বলেন, “২০১১ সালে রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ নন্দীগ্রামের ১৭টি অঞ্চলজুড়ে ধারবাহিকভাবে যে বহুমুখী উন্নয়নমূলক কাজ করছে, সেই কাজে সংযোজিত হল এই পথবাতি। মাসে মাসে এই পথবাতির জন্য প্রয়োজনীয় বিলের টাকা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ দেবে।” তিনি আরও বলেন, “এই এলাকায় আমার অনেক দিনের যাতায়াত। হয়তো প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে আমাকে পাওয়া যায় না। কিন্তু আমার দায়িত্ব বোধ আছে যে কখন কখন আসতে হয়। কখন মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয়।”
সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পর রবিবার শুভেন্দুর সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত থাকার ঘটনা রাজনীতির এক নতুন মোড় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ।