রাজেন রায়, কলকাতা, ৩ ডিসেম্বর: ধীরে ধীরে ধসে পড়ছে তৃণমূলের সেই বিখ্যাত ডিফেন্স যা এক সময়ে ধসিয়ে দিয়েছিল ৩৪ বছরের বাম দুর্গ। একাধিক হেভিওয়েট বিধায়ককে চেষ্টা করেও আর ধরে রাখতে পারছে না তৃণমূল, যার সর্বশেষ সংযোজন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার রাতে বৈঠকের পরেও বুধবার সকালে নিজেই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে হোয়াটসঅ্যাপ করে জানিয়েছেন, আমাকে মাফ করবেন, এভাবে আর একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। এই ঘটনার পর শুভেন্দুকে ছেড়েই এগোতে চাইছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার দলীয় বৈঠকের পর শুভেন্দু চ্যাপ্টার ক্লোজড বলে সেই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুভেন্দু নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেননি। অনেকে মনে করছেন শুভেন্দু তাঁর রাজনৈতিক জমি মেপে নিচ্ছেন। আবার অনেকে বলছেন, শুভেন্দুর বিজেপি যাত্রা কেবল সময়ের অপেক্ষা।
এই পরিস্থিতি যখন চলছে তখন, নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে এবার সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে। তার জায়গায় ফেরানো হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
পুজোর আগে থেকেই শুভেন্দু অধিকারী বেশ সচেতন ভাবে দলের সব কর্মসূচি এড়িয়ে যেতে শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকও এড়িয়ে যেতে শুরু করেছিলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফে আগেই দলের নিজস্ব সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি ফেডারেশনের মাথা থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে মেন্টর পদে রাখা হয়েছিল। এদিন কিন্তু সেখান থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তে মেন্টর পদে ফেরানো হচ্ছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। শুভেন্দুকে যখন এই সংগঠনের মাথাতে বসানো হয়েছিল তখন পার্থবাবুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল মেন্টর পদ থেকে। কিন্তু এখন সেই পদেই তাঁকে ফেরানো হচ্ছে। ঠিক যেমনভাবে শুভেন্দুর পরিবহনে ফের প্রবেশ ঘটেছে মদন মিত্রের। গত সপ্তাহে শুভেন্দু প্রথমে পদত্যাগ করেন হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে। তারপরের দিনই তিনি পদত্যাগ করেন রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতির পদ থেকেও।
এদিন রাজ্য সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের নেতৃত্বের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারি থেকে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণার পাশাপাশি জানিয়ে দেন, মেন্টর নয় পার্থ চট্টোপাধ্যায় আপাতর ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বই সামলাবেন। কনভেনার পদে থাকবেন দিব্যেন্দু রায়।