রাজেন রায়, কলকাতা, ১৮ নভেম্বর: বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সময় তাঁর ডানা ছাঁটার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সরাসরি মুখে দল ছাড়ার কথা না বললেও বিভিন্ন জায়গায় সমান্তরালভাবে জনসংযোগ বাড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। শুভেন্দুর এহেন কার্যকলাপে তাঁকে দলে আহ্বান জানিয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপিও। এমনকি শুভেন্দুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবার শিশির অধিকারীকে ছেলেকে নিয়ন্ত্রণে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলের রাজনৈতিক গুরু প্রশান্ত কিশোর। যদিও এত কিছু করেও শুভেন্দুকে থামানো যায়নি।
শুভেন্দু সঙ্গে প্রশান্ত কিশোর বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, প্রশান্ত কিশোর ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি কোনো কথা বলবেন না। তিনি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। দুই বর্ষীয়ান সাংসদ ও এক ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীকে একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন বিকেলে মমতার নির্দেশে তৃণমূলের শীর্ষনেতা তথা বর্ষীয়ান সাংসদের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠক হয়। তারপর আরও এক বর্ষীয়ান সাংসদ ও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের শুভেন্দু জানান, তিনি কথা বলতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তবে তাঁর তিনটি দাবি রয়েছে। এক, দলে তাঁর গুরুত্ব বাড়াতে হবে। দুই, সংগঠনকে পুরনো অবস্থানে ফেরাতে হবে। তিন, ফের পুরনো জেলাগুলির দায়িত্ব দিতে হবে।
শুভেন্দু অধিকারী আগে যে সমস্ত জেলার দায়িত্বে ছিলেন, সেইসব জেলায় তিনি ভালো ফল করিয়েছেন এবং লোকসভা পরবর্তী সময়ে তিনি উপনির্বাচনেও দলকে প্রশ্নাতীত সাফল্য এনে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যদি শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব না বোঝেন, তাহলে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক পথ পাল্টাতেই পারেন মেদিনীপুরের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।