আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ আগস্ট: তৎকালীন পরাধীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশ কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে গিয়ে মিস কেনেডি এবং মিসেস কেনেডির গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করেছিল কেশপুরের তরতাজা যুবক ক্ষুদিরাম বসু। এই অপরাধে তাকে ইংরেজ সরকার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে। স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার প্রথম শহিদ ক্ষুদিরাম বসু।
১৯৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের অন্তর্গত মোহবনি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা তৈলক্যনাথ বসু ও মাতা লক্ষীপ্রিয়া দেবীর পরিবারে কনিষ্ঠতম সন্তান ক্ষুদিরাম। ছোট থেকেই দেশের প্রতি তার প্রাণ উদ্বুদ্ধ ছিল। ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য তিনি নিজের জীবনকে নিয়োজিত করেছিলেন। অবশেষে ইংরেজ সরকারের নির্দেশে ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ভোর পাঁচটার সময় বিহারের মুজাফফরপুর জেলে তার ফাঁসি হয়। দেশের জন্য মাত্র ১৮ বছর বয়সেই তিনি প্রাণ বিসর্জন দেন।
ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ১১ আগস্ট গোটা ভারতবর্ষের পাশাপাশি কেশপুরের মহবনীতে যথোচিত মর্যাদায় শ্রদ্ধার সঙ্গে শহিদ দিবস পালন হয়ে আসছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে ক্ষুদিরাম উন্নয়ন পর্ষদ গঠিত হয়েছে মহাবনিতে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে এবং কেশপুর ব্লক ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শ্রদ্ধার সঙ্গে শহিদ দিবস পালন করা হয়। শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান করেন পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদরী, জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক আধিকারিক বরুণ মন্ডল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, সহ-সভাপতি অজিত মাইতি, কেশপুরের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কোশিষ রায় ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য কেশপুরের মোহবনির ছোট্ট ছেলেটাই প্রথম আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। স্বভাবতই আমি সেখানকার একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার কাছে বিষয়টি অন্যরকম অনুভূতির। দেশের জন্য যিনি নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁর পূর্ণভূমিতে এসে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই মোহবনীর মাটি, এই কেশপুরের মাটি স্বাধীনতার মাটি, যারা দেশের জন্য প্রাণ বলিদান দিয়েছেন তাদেরকে আমরা যাতে কোনদিনই না ভুলে যাই সেই দিকটি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।