আমাদের ভারত, বাংলাদেশ, ২২ ডিসেম্বর: “লোমহর্ষক ঘটনা অব্যাহত রেখে স্বার্থান্বেষী অশুভ মহল অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও বেশি অস্থিতিশীল করতে তৎপর।” বাংলাদেশে চলমান ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করল বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
সোমবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এখবর জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, “সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ এক সমাবেশে এই মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই অবস্থা আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে অবাধে ভোটদানের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে আতঙ্কিত ও নিরুৎসাহিত করে চলেছে। গণতন্ত্রে উত্তরণে এহেন বাধা অপসারিত না হলে তা প্রকারান্তরে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলতে পারে।
সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অনতিবিলম্বে বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা হিংসায় দোষীদের গ্রেফতার ও তাদের শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানাই।”
বিবৃতিতে তিনি জানান, “চলতি বছরে সারা দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অর্ধশতাধিক হত্যাসহ অর্ধ সহস্রাধিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র ডিসেম্বরের প্রথম তিন সপ্তাহেই ৫ জন সংখ্যালঘুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন, ২০২৫ সালের ২ ডিসেম্বর নরসিংদীর রায়পুরায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রাণতোষ কর্মকার, ৫ ডিসেম্বর ফরিদপুরের সালফায় মৎস্য ব্যবসায়ী উৎপল সরকার, ৬ ডিসেম্বর রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রধান শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায় প্রমুখ।
১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টায় কথিত ধর্ম অবমাননার অজুহাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় গার্মেন্টস শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে অর্ধমৃত করে গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে বর্বরোচিতভাবে হত্যা। এছাড়াও গত ১৯ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে ঝিনাইদহে গোপাল বিশ্বাস নামের এক রিক্সাচালককে স্থানীয় পৌরসভা গেটের সামনে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা ভারতীয় গুপ্তচরের চরের তকমা লাগিয়ে আটক করে। গণধোলাই দিয়ে স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয় ছাত্র-জনতা।”

