স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা আত্মসাৎ, প্রতিবাদে বাঁকুড়ার সোনামুখীতে রাস্তা অবরোধ ও বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২১ এপ্রিল: স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাদের টাকা আত্মসাৎ ও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তির দাবিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের পথ অবরোধকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় সোনামুখী ব্লকের কৃষ্ণবাটিতে। অবরোধের খবর পেয়ে সোনামুখীর বিডিও ঘটনাস্থলে হাজির হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অবরোধকারীরা। ওই সময় তাকে ঘিরে ধরে ক্ষোভের কথা জানান তারা। ঐসময় তিনি হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, বিক্ষোভ চলাকালীন বিডিও দেবলীনা সর্দারের ওড়না ধরে টানারও মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে সেই ঘটনা। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আমাদের ভারত।

অপরদিকে বিডিও স্বয়ং হেনস্থার ঘটনা অস্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমে জানান, হেনস্থার ঘটনা ঠিক নয়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার প্রশাসনিক মহলে।
বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের মানিকবাজার এলাকায় প্রায় ২০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। সেই গোষ্ঠীর সদস্যাদের নাম করে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন সংঘের সিএসপি’রা। অভিযুক্তদের শাস্তি ও তাদের নামে বেআইনি ভাবে নেওয়া ঋণ থেকে তাদের নিষ্কৃতির দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তপ্ত সোনামুখীর মানিকবাজার এলাকা। গোষ্ঠীর মহিলাদের দাবি, “আমাদের অজান্তেই আমাদের নামে ঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ঋণ না নিয়েও প্রতিটি সদস্যার কাঁধে এখন চেপে বসেছে হাজার হাজার টাকার ঋণের বোঝা। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ওই ঋণের বোঝা থেকে আমাদের মুক্তি দেওয়া ও প্রতারকদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তির দাবিতে আমরা লাগাতার আন্দোলনে নেমেছি। এই দাবিতে এলাকার প্রতারিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা আজ কৃষ্ণবাটি এলাকায় জমায়েত হন। সেখানে বিষ্ণুপুর সোনামুখী সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এর ফলে ওই সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় সোনামুখী থানার পুলিশ। সংঘের অভিযুক্ত দুই সিএসপি কর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের শান্ত করার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তারপরও নিজেদের আন্দোলনে অনড় থাকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা।

তাঁদের দাবি, প্রতারকদের শুধু শাস্তি নয় প্রতিটি সদস্যার কাঁধে অযথা চেপে বসা ঋণের বোঝা সরানোর ব্যাপারে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। এরপর অবরোধস্থলে সোনামুখীর বিডিও দেবলীনা সর্দার পৌঁছানোর পর তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গোষ্ঠীর মহিলারা। এমনকি তাকে হেনস্থাও করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও বিডিও হেনস্থার কথা অস্বীকার করে বলেন, হেনস্তা করার বিষয়টিও ঠিক নয়। গোষ্ঠীর মহিলার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রয়েছেন কারণ তারা মনে করছেন তাদের অনেক টাকা শোধ করতে হতে পারে। তাই তাদের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *