করোনার প্রকোপে এবার সঙ্কটজনক সমরেশ, আক্রান্ত লক্ষীরতন শুক্লার বড় ছেলেও

রাজেন রায়, কলকাতা, ২৭ জুলাই: কিছুদিন আগে করোনার থাবায় প্রাণ গিয়েছে তৃণমূলের ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের। এবার জীবন সংশয়ের মত পরিস্থিতি তৈরি হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার বিধায়ক ৭০ বছরের সমরেশ দাসের। কিছুদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এই বিধায়ক। অন্যদিকে, স্ত্রী সেরে ওঠার পরেই নিজের ও বড় ছেলের করোনা টেস্ট করিয়েছিলেন লক্ষীরতন শুক্লা। সূত্রের খবর, লক্ষ্মীর রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও তাঁর বড় ছেলে করোনা পজিটিভ। ফলে তারা সকলে এখন হোম আইসোলেশনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, সত্তরোর্ধ্ব বিধায়ক সমরেশ দাসের এমনিতেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও হাঁপানির টান রয়েছে। এর ওপরে শরীরে সপ্তাহখানেক আগে হানা দিয়েছে করোনা। কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর থেকেই সমরেশবাবু প্রথমে পাঁশকুড়ার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকায় পাঁশকুড়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার কোনও ভালো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। সেই মতো তাঁকে কলকাতায় এনে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণের সঙ্গে কো-মরবিডিটির কারণে সমরেশবাবুর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা। সমরেশের শারীরিক অবস্থা স্বভাবতই উদ্বিগ্নতা চিন্তা বাড়াচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে।

অন্যদিকে, রাজ্যের ক্রীড়া রাষ্ট্রমন্ত্রী ও তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি লক্ষ্মীরতন শুক্লা রবিবার থেকেই ফের সপরিবারে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা শুরু করেছেন। লক্ষ্মীরতন নিজেই একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার তাঁর স্ত্রীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ওইদিনই তাঁদের হোম আইসোলেশন পর্ব শেষ হয়। এরপর শনিবার তিনি ও তাঁর বড় ছেলের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এদিন তাঁর বড় ছেলের সেই রিপোর্ট পাজিটিভ আসে। এরপর তাঁরা ফের সপরিবারে থেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা শুরু করলেন।

২০০৯ সালে বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতে পূর্ব মেদিনীপুর এগরা বিধানসভার এমএলএ হন তিনি। ১১ বছর ধরে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও তৃণমূলের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু প্রথম করোনা আক্রান্ত হন। তারপর পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ ও তাঁর ছেলে। ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ করোনার প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও দক্ষিণ দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদের দুই তৃণমূল বিধায়কের করোনা রিপোর্টও পজিটিভ। পানিহাটির বিধায়কের সংস্পর্শে আসার কারণে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তা ছাড়া ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্তেরও কোভিড টেস্ট হয়েছিল। তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের বাড়ির এক পরিচারিকা কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর গোটা পরিবার কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। পাশাপাশি বাকিরাও রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *