আমাদের ভারত, ১ ফেব্রুয়ারি: এই বছরের বাজেট এক কথায় ভোটের বাজেট। সামনের বছর নির্বাচন, এই বাজেট সেটাই মনে করে দিচ্ছে। এর সাথে দেশের অর্থনীতির যোগাযোগ খোঁজাটা দরকার নেই।”
দেশের অর্থমন্ত্রীর আগের বছরের বাজেট আরও আকর্ষণীয় ছিল। তবে এই বছরের বাজেটে কিছু নতুন নীতিগত ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। সরকারকে সাধুবাদ জানাই। আমার নিজস্ব মতামত হল— এক, যে সমস্ত অংশ এবং উপাদান আমাদের দেশে তৈরি হয় না সেগুলোর উপর আমদানি শুল্ক কমানোর কথা বলা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ উৎসাহিত হবে প্রধানত ইলেকট্রনিক্স শিল্প। মুঠোফোনের দাম কমবে।
দুই, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে আগে নিয়ে যাবার জন্যে ভালো কিছু উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। এটার খুবই দরকার ছিল। এছাড়া কৃষির জন্য ডিজিটাল পাবলিক অবকাঠামো তৈরির কথা বলা হয়েছ। সবার হাতে স্মার্ট ফোন। সুতরাং, সব চাষি ভাইরা উপকৃত হবেন।
তিন, ভারতবর্ষ বাজরা উৎপাদনে এক নম্বর বিশ্বে। বাজরা চাষ থেকে রিটেল আউটলেট পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের সুবিধার কথা বলা হয়েছ। খুবই ভাল। ভারতের প্রধান বাজরা উৎপাদনকারী রাজ্যগুলি হল রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা। বর্তমানে, এই দশটি রাজ্য মিলে ভারতে বাজরা উৎপাদনে প্রায় ১০০ শতাংশ অবদান রাখে। এই রাজ্যগুলো কিন্তু সামনে ভোটের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অন্য রাজ্য গুলো তাহলে তাদের যে নিজস্ব প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে তাহলে তারা কেন বাজরার মতো সাহায্য পাবে না? আমার মনে হয় এই ধরণের আংশিক সাহায্য দেশের কৃষি উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করবে।
চার, পরিকাঠামো সেক্টরে নতুন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। যেমন রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন বিমানবন্দর, হেলিপ্যাড ইত্যাদি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন যে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ১০ লক্ষ কোটি টাকার বর্ধিত মূলধন জিডিপির ৩.৩ শতাংশ।
পাঁচ, ভোট আসছে। তাই আয়কর সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটের এক বছর আগেই সেই সীমা বাড়িয়ে ৭ লাখ টাকা করা হল। সাত লক্ষ টাকা বার্ষিক আয় পর্যন্ত কর দিতে হবে না। এতে বাজারে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ব।কর সরলীকরণের কথা বলা হয়নি।
ছয়, বাজেটে ‘সবুজ প্রবৃদ্ধি’-র কথাও বলা হয়েছে। এটি একটি ছোট সূচনা তবে আমাদের আগামী বছরগুলিতে নেট জিরো অর্থনীতি অর্জনে সহায়তা করবে।
সাত, বরাদ্দের দিক থেকে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পায়, তারপরে সড়ক পরিবহন এবং মহাসড়ক, রেলপথ, ইত্যাদি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব একটা কিছু পায় না। প্রথম দশ-এ আসে না। আমি খুশি নই। আমরা যদি ভালো বরাদ্দ না পাই, তাহলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আমরা কী করব?
আট, ক্রীড়াক্ষেত্রে জোর দিতে চাইছে সরকার। সেই কারণে এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে খেলাধুলোর উপর।এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।
সব মিলিয়ে সবাইকে খুশি করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই কোনো বিশেষ দিক নেই। সেটাই স্বাভাবিক। সামনে ভোট আসছে।”