আমাদের ভারত, ১২ জুলাই: জমজমাট নাটক শুরু হয়েছে এবার মরুরাজ্যে। ১২ জন বিশ্বস্ত কংগ্রেস বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে একেবারে দিল্লিতে সোনিয়ার দরবারে হাজির হয়ে গেলেন রাজস্থান কংগ্রেসের সভাপতি শচীন পাইলট। এর ফলে রাজস্থান রাজনীতির ভবিষ্যত এখন কংগ্রেস হাইকমান্ডের হাতে। শোনা যাচ্ছে নিরাপত্তাহীনতায় নাকি ভুগছেন শচীন পাইলট। দলের মধ্যে তার কোনঠাসা অবস্থা। আর এর থেকেই স্পষ্ট রাজস্থান কংগ্রেসের আন্দরের বাইরের নয়। শচীন পাইলটের তৎপরতা আটকাতেই বিজেপিকে ঢাল করার চেষ্টা করেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।
শনিবার কংগ্রেসের ঘর ভাঙাচ্ছে বিজেপি এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন গেহলট। কিন্তু রবিবার সকালে পাল্টে গেল ছবি। ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে সোজা সোনিয়ার কাছে গিয়ে হাজির হয়েছেন রাজস্থান কংগ্রেসের সভাপতি শচীন পাইলট।
এদিকে রাজস্থান কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সোনিয়া গান্ধীকে রিপোর্ট করেছেন রাজস্থান কংগ্রেসে কোন গোল মাল নেই। শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বেশিরভাগ বিধায়ক। কিছু বিধায়কের ক্ষোভ রয়েছে তার সমাধান করে ফেলা হবে। এইসব ক্ষোভের কথাই সম্ভবত অশোক গেহলট উল্লেখ করে বলেছিলেন, যে বিজেপি টাকা দিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সরকার ফেলে দিতে চাইছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।এছাড়া তিনজনের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেছে অ্যান্টি কোরাপসন বিউরো। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারকে সমর্থনকারী দুই নির্দল বিধায়ককে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেছে এরা। তাদের ঘুষ দিয়ে গত মাসে রাজ্যসভা নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনায় শচীন পাইলটের বয়ান রেকর্ডের জন্য সময় চেয়েছিল স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। আর তাতেই ক্ষুব্ধ শচীন। তার ধারণা এবার তার হাত থেকে ফসকে যেতে চলেছে রাজ্য সভাপতির পদ।
রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আবিনাশ পান্ডে লিখেছেন শচীন পাইলট ভয় পাচ্ছেন যে তার সভাপতি পদটা চলে যেতে পারে। ২০১৪ সাল থেকে তিনি কংগ্রেসের সভাপতি রয়েছেন। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে তারই নেতৃত্বে। রাজনৈতিক মহলের প্রাথমিক ধারণাও ছিল তিনিই হতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু হাইকমান্ডের নির্দেশে গেহলেট বসেন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে। উপমুখ্যমন্ত্রী হন পাইলট। একই সঙ্গে তাকে দলের সভাপতি পদেও রেখে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর শচীন মনে করছেন গেহলট শিবির তাকে সভাপতি পদ থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। সেই নিরাপত্তাহীনতা থেকেই ভেতরে ভেতরে সমস্যা তৈরি করছেন তিনি। শচীন পাইলটের আরো অভিযোগ উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাকে এড়িয়ে চলছে দল। এখন দেখার দলের অন্দরের এই কন্দোল কিভাবে সামাল দেয় কংগ্রেস। নাকি আবার মধ্যপ্রদেশের নাটকের পুনঃ সম্প্রচার হয় রাজস্থানে।