আমাদের ভারত, ৫ মার্চ: লাগাতার দশ দিন হামলার পর সাময়িকভাবে যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাশিয়া। শহরে আটকে থাকা নাগরিকরা যাতে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারেন সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুতিন সরকার। ভারতীয় সময় শনিবার সকাল ছয়টায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে রাশিয়া। জানানো হয়েছে মানবিক স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মানবিক করিডোর করে দেওয়া হবে সাধারণ মানুষের জন্য, যাতে নিরাপদে তারা বেরিয়ে যেতে পারেন।
এতে ইউক্রেন সরকারও সম্মত হয়েছে।
স্থানীয় সময় সকাল ন’টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। বেলা ১১টায় সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধার কাজ শুরু হয়। মারিউপুলের সাড়ে চার লাখ এবং ভোলনোভাখায় ২১ হাজার মানুষ পানীয় জল বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের নিরাপদে বের করে আনা হবে বলে জানা গেছে ।
শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয় ৫ মার্চ মস্কোর স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর পাঁচটায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। মারিউপুল ও ভলনোভাখা থেকে নাগরিকরা যাতে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারেন সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। মানুষকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য মানবিক করিডর করে দেওয়া হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সেনা অভিযান ঘোষণা করে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানিয়ে দেন ইউক্রেনের মাটিকে ব্যবহার করে ন্যাটো এবং আমেরিকাকে কোনোভাবেই রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে দেবেন না। তারপর থেকে লাগাতার দশ দিন ধরে রক্তাক্ত যুদ্ধ চলছে। এখনও পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়ার তরফেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। যুদ্ধ থামাতে দফায় দফায় বৈঠকে বসেছে দু’পক্ষ। কিন্তু সমাধানসূত্র এখনও বেরোয়নি। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেওয়ার বিরোধী রাশিয়া। সেখানে ন্যাটো এবং আমেরিকার সামরিক কাজ কর্মেও তীব্র আপত্তি তাদের। আবার ইউক্রেনও মাথা নোয়াতে নারাজ। ফলে এই যুদ্ধে পরিস্থিতি কবে সাঙ্গ হবে তা এখন বলা প্রায় অসম্ভব। তবে সাধারন মানুষের স্বার্থেই আপাতত যুদ্ধবিরতি।
সকালে বন্দর শহর মারিউপুল দখল করেছে রাশিয়া। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানকার বিদ্যুৎ সংযোগ, খাদ্য, জল-সরবরাহ সহ সমস্ত যানচলাচল। শীতে ঘরে ঘরে উষ্ণতা বজায় রাখার প্রযুক্তিতে বাঁধ সাধা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদের নাৎসি বাহিনী ঠিক একই ঘটনা ঘটিয়েছিল তাই তাদের সঙ্গে রাশিয়ার তুলনা টানতে শুরু করেছেন অনেকেই। তবে মারিউপুলের মেয়র জানিয়েছেন আপাতত মানবিক সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করছেন তারা।
ভারত প্রথম থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন দু দেশকে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছিলেন এখনও খারকিভ ৩০০ ও সুমিতে ৭০০ ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাই সকলকে নিরাপদে বের করে আনতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।