আমাদের ভারত, ৫ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশে এবং এপার বাংলায় কিছু অংশে হিন্দুদের লাগাতার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় চিন্তিত রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। বুধবার সঙ্ঘের পূর্ব ক্ষেত্র সহ প্রচার প্রমুখ ডঃ জিষ্ণু বসু রাজ্যের কারও নাম না করে প্রকাশ্যেই দাবি করেন, “রাজনৈতিক দল যদি এ ব্যাপার ভুল করে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তের পক্ষ থেকে এদিন মাণিকতলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের ব্যবস্থা হয়। সেখানে জিষ্ণু বসুকে হিন্দুদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “কালিয়াচক, ধূলাগড়, খাগরাগড়-সহ কিছু অঞ্চল সংবাদে এসেছে। সীমান্তবর্তী নানা অঞ্চল অস্থির। জনমানচিত্র (ডেমোগ্রাফি) বদলে যাচ্ছে। যদি কেউ এ ব্যাপারে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা করে, ভুল করছেন। ওপার বাংলা থেকে অগণিত হিন্দুকে এপারে চলে আসতে হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে এরকম অবস্থা চলতে থাকলে পরে এ রাজ্যের অনেককে গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে পালাতে হতে পারে। রাজনৈতিক দল যদি এ ব্যাপার ভুল করে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতনের ঘটনায় বিজয়া দশমীর ভাষণে সরব হয়েছেন। তাঁর কথায়, পড়শি দেশে হিন্দুরা গুরুতর বিপদের মধ্যে আছেন।প্রথামাফিক নাগপুরে আরএসএস- এর সদর দফতরে ওই ভাষণ দেন ভাগবত। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পরেই বাংলাদেশে কিছু মানুষের মধ্যে পাকিস্তান প্রেম জাগ্রত হয়েছে। তারা বলছে, পাকিস্তানের কাছে পরমাণু বোমা আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে হিন্দুস্থানকে চাপে রাখা যাবে। বাংলাদেশে যে দেশ এই ধরনের প্রচারে উসকানি দিচ্ছে তাদের নাম আমরা বলতে চাই না। তবে তারা ভারতেরও অনিষ্ট করতে চায়।
সঙ্ঘ অনুগামীদের কাছে আরএসএস প্রধানের দশমীর ভাষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে বুধবার জিষ্ণুবাবু বলেন, “অনেক হিন্দু ওখানে আক্রান্ত হয়েছেন। হচ্ছেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর বিপ্লবীদের পরিবারের বহু লোক বা আত্মীয় স্বজন এখনও ওখানে থাকেন। আন্তর্জাতিক স্তরে এ ব্যাপারে যে প্রচার দরকার, সঙ্ঘ তা করছে।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে কেবল হিন্দুদের এবং তাঁদের সম্পত্তি ও ধর্মস্থানের ওপরই আক্রমণ হচ্ছে না, প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন ইস্কন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। তাঁর জামিনের আবেদন একের পর এক খারিজ হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ হাইকোর্টে ওঠে ওই মামলা। তাতে বড় পদক্ষেপ করে বাংলাদেশ হাইকোর্ট। ওই শুনানিতে সরকারকে প্রশ্ন করা হয়, কেন চিন্ময়কৃষ্ণকে দেশদ্রোহের মামলায় জামিন দেওয়া হবে না তার জবাব দিন। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে হবে। বিচারপতি মহম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মহমম্মদ আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার ওই রুল জারি করেন।