সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১২ জুলাই: দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ব্লকের বহড়ামুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাস্তার বেহাল অবস্থা। এনিয়ে ক্ষোভে সরব গ্রামবাসীরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে হাতিরামপুর থেকে বনকাটা ও তালগোড়া গ্রামে যাওয়ার প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা একেবারে বেহাল হয়ে পড়েছে। ছোট- বড় গর্তে ভরে উঠেছে পুরো রাস্তা। বৃষ্টিতে গর্তগুলি জল ও কাদায় ভরে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত, প্রশাসন এমনকি জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তাই শনিবার তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাস্তাটি দ্রুত সারাই না হলে আন্দোলনে নামার কথা বলেন।
অন্যদিকে এনিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্য, হাতিরামপুর থেকে বনকাটা ও তালগোড়া গ্রামে যাওয়ার রাস্তা এখন যেন মরণফাঁদ। পথশ্রী প্রকল্পে জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকায় ঢালাই রাস্তা সম্পূর্ণ হয়েছে বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করছেন। এই রাস্তা তার নমুনা বলেও কটাক্ষ করেন তারা। রাস্তাটির এতটাই বেহাল দশা যে অ্যাম্বুলেন্স সহ কোনো ছোট চারচাকার গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। এমনকি টোটো অনেক সময় ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। এই এলাকায় ১৫০-১৭০টি পরিবারের বসবাস। তাদের এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তাদের অভিযোগ, গ্রামের ছেলেমেয়েদের সাইকেলে করে স্কুল বা টিউশন পড়তে যেতে হয়। অনেক সময় তারা সাইকেল থেকে পড়ে যায়। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়।
গ্রামের বাসিন্দা চম্পা খাঁ জানান যে, তার ঘরে হার্টের রোগী রয়েছে। যে কোনো সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে যাওয়া খুবই সমস্যা হয়ে পড়বে। গ্রামের মধ্যে ঢুকতে চাইছে না কোনো টোটো বা চার চাকা গাড়ি। তার বক্তব্য, দু’দিন আগে তার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কোনো গাড়ি গ্রামে না ঢোকায় ছেলেকে কোলে নিয়ে তাকে গ্রাম থেকে হেঁটে হাতিরামপুর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয়েছিল। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করতে হয়েছিল।তাই প্রশাসনের কাছে আবেদন, দ্রুত রাস্তাটি যেন ঢালাই করা হয়।
সাইকেলে করে ফেরি করতে আসা আনারুল হক জানান, যে গত সপ্তাহে গ্রামে যাওয়ার পথে পড়ে গিয়ে অনেক চিনামাটির কাপ- প্লেট ভেঙ্গে যায়।
এক টোটো চালক জানান, এই জল কাদায় গাড়ি ফেঁসে রয়ে যায়। গাড়ি কোনরকম ঠেলাঠেলি করে পারাপার করতে হয়। এই অবস্থায় এই গ্রামে ঢোকা অসম্ভব। তাই কোনো ভাড়া বললে যেতে পারি না গ্রামের ভেতরে।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনুসূয়া রায় জানান, আমার জানা ছিল না ঐ রাস্তাটা এতটা খারাপ। তবু স্থানীয় বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলে রাস্তাটি যাতে চলাচলের যোগ্য হয় তার ব্যবস্থা যেন করা হয়।
এ নিয়ে হিড়বাঁধ মন্ডল বিজেপির সভাপতি অতনু হালদার জানান, এই সরকার শুধু কাটমানি খেতে ব্যস্ত। রাস্তাঘাট কী করে হবে? এই রাস্তা অবিলম্বে মেরামত করা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।