স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ৮ সেপ্টেম্বর:
লকডাউনে ঘরে বসে হাপিয়ে উঠেছিলেন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়ার বাসিন্দা কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বিধান রায়। মাজদিয়ার ধরমপুরে তাঁর একটি খামার বাড়ি আছে। করোনা আবহে ঘরবন্দি না থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজে কিছু করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে এলেন। লকডাউন এবং করোনা সংক্রমণের কারনে কর্মহীন গ্রামের অনেক পরিবার। সেই সব দুঃস্থ মানুষদের সহযোগিতা করার মানসিকতা থেকেই তিনি তাঁর পৈত্রিক জমিতে স্থানীয় কিছু কর্মহীন মানুষকে নিয়ে শুরু করলেছেন জৈব সার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ।
সবজি চাষ ছাড়া সাড়ে পাঁচ বিঘার একটি পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। এছাড়া, ডিমেরর জন্য হাঁস, মুরগি পালন করছেন। তার এই কর্মকাণ্ড দেখে খুশি গ্রামের মানুষজন। ধরমপুরের বিধানবাবুর ওই খামারবাড়িতে একটা সময় বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল এবং নানান সবজি চাষ হত। কেবলমাত্র নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য। লকডাউনের বাজারে বিধানবাবু ঠিক করলেন যাদের কাজ নেই, তাদের সঙ্গে নিয়ে চাষবাস এবং হাঁস ও মুরগি লালন পালন, পাশাপাশি মাছও চাষ করলে কেমন হয়। সেই মত সবার প্রচেষ্টায় ওই ফার্মে নানা রকমের শাকসবজি, ফল, পুকুরে মাছ, হাঁসমুরগির ডিম ইত্যাদি উৎপাদন হচ্ছে।

এই উৎপাদিত ফসল, পুকুরের মাছ, হাঁস মুরগির ডিম বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধানবাবু পরিবারের খাদ্য সমস্যা যেমন মিটেছে, তেমনি তার কাছে কর্মরত শ্রমিক এবং এলাকার দুঃস্থ মানুষরাও লাভবান হয়েছেন। তার এই উদার মানসিকতায় ফলে উপকৃত হচ্ছেন গ্রামের বহু মানুষ। তিনি বলেন, লকডাউনে বহু মানুষই আজ অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। বাজারে সবজি, ফল, মাছ, ডিমের দাম আকাশছোঁয়া। তার ফার্মের উৎপাদিত নানা ফসল, মাছ, ডিম এলাকার মানুষের খাদ্যের ঘাটতি কিছুটা হলেও মেটাতে সক্ষম হয়েছেন বিধানবাবু। তিনি বলেন, এই ফার্মের উৎপাদিত প্রোটিন যুক্ত ফসল পুকুরের মাছ, হাঁস মুরগির ডিম বহু মানুষের খাদ্যের ঘাটতি কিছুটা হলেও কমানো গেছে। বিধানবাবুর কথায় সীমান্তবর্তী গ্রাম বহু মানুষই অর্থনীতি দিক দিয়ে পিছিয়ে তার মধ্যে কর্মহীন। এই পরিস্থিতিতে যদি তাদের পাশে এই ভাবে থাকা যায়। তবে তাদের মুখে হাসি ফুটবে। তিনি মনে করেন যাদের সামর্থ্য আছে তারা যদি এইভাবে এগিয়ে আসেন তবে এলাকার খাদ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমবে।

