আমাদের ভারত, ১৫ জুলাই: মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান। রাতে শান্তিতে ঘুমনোর পক্ষে রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
আদালত বাসন কারখানাগুলিকে ১৫ দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই এলাকা থেকে বাসন কারখানা সরিয়ে ফেলতে হবে। কারখানার মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এই রায় ঘোষণার পরেই এলাকার মানুষের মধ্যে খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান।
এতদিন বাসন কারখানার শব্দে রাতের ঘুম নষ্ট হচ্ছিল। ফলে জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মুর্শিদাবাদের সামশেরঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের কয়েক জন গ্রামবাসী আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৬৪ সালে ফরাক্কায় ব্যারেজ তৈরি প্রকল্পের জন্য ওই এলাকায় অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি যায় মুর্শিদাবাদের মহব্বতপুর গ্রামের লোকেদেরও। পরে সরকারের তরফে জমিহারাদের কিছু পরিমাণ জায়গা দেওয়া হয়।
জিয়াউল শেখ-সহ জনস্বার্থ মামলাকারীদের বক্তব্য, সরকার বাড়ি বানানোর জন্য ওই জমি দিয়েছিল। সেখানে জমি পেয়েছেন এমন এক ব্যক্তি বাড়ি না বানিয়ে সম্প্রতি বাসন তৈরির কারখানা করেন। ফলে ওই কারখানা থেকে ইস্পাতের ব্যাপক শব্দ হয়। রাতে ওই শব্দ আরও ভয়ানক আকার ধারণ করে। ওই শব্দে রাতে তারা ঘুমোতে পারছেন না। তিনি
আদালতকে জানিয়েছিলেন যে, ওই কারখানা থেকে রাতের বেলায় প্রচুর শব্দ বের হয়, যার ফলে এলাকার বাসিন্দাদের ঘুমোতে সমস্যা হচ্ছে। এমনকি শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের উপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।এলাকার বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, ওই কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশের ক্ষতিও করছে। এ সবের পরেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি৷
শেষ পর্যন্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভাসাইপাইকর গ্রামের বাসিন্দারা৷ আদালতের নির্দেশের পর এবার রাতে নির্বিঘ্নে ঘুমোবেন, আশা গ্রামের বাসিন্দাদের৷ আর এই রায়ের ফলে এলাকার বাসিন্দারা প্রচন্ড খুশি।