আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২৮ ডিসেম্বর: সিসিটিভির নজরদারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরকারি হোমের দেওয়ালে সুড়ঙ্গ কেটে রাতের অন্ধকারে পালাল ৭ বাংলাদেশি সহ এক ভারতীয় কিশোর। কাঠগড়ায় হোমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুক্রবার রাতে বালুরঘাটের হোসেনপুরের সরকারি শুভায়ন হোমের ঘটনা। কেটে ফেলা হয়েছে কাঁটা তারের উঁচু বেড়াও। শনিবার এমন ঘটনা সামনে আসতেই তুমুল হইচই পড়ে এলাকায়। ঘটনা জানতেই এদিন সকালে এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র সহ বালুরঘাট থানার অইসি ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। যদিও এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া হোম সুপার বরকত আলী।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে হোম কর্তৃপক্ষের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতেই ঘটনার তদন্তে নামে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানিয়েছেন, গাফিলতির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে মহকুমাশাসককে তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বছর তিনেক আগে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কখনো পুলিশ আবার কখনো বিএসএফের হাতে আটক হয় পলাতক সাত বাংলাদেশি কিশোর। ঘটনার পর সিডাব্লুসির মাধ্যমে তাঁদের ঠাঁই হয়েছিল বালুরঘাটের সরকারি শুভায়ন হোমে। হোমে থাকার মেয়াদ শেষ হলেও দুই দেশের আইনি জটিলতায় তাঁদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়নি। ফলে হোমেই রাখা হয়েছিল তাঁদের। অপর কিশোর দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারীর বাসিন্দা। সরকারি ওই হোমের প্রাচীর টপকে অথবা কাঁটা তারের বেড়ায় জামা কাপড় ফেলে আবাসিক বন্দিদের পালানোর এই ঘটনা নতুন কোন ঘটনা নয়। এর আগেও সামনে এসেছে এমন একাধিকবার এমন ঘটনা। যার পরেই হোম কর্তৃপক্ষ হোমের প্রাচীরের উচ্চতা বাড়িয়ে নতুন করে কাঁটা তারের বেড়া দেয়। শুধু তাই নয়, বাড়তি নজরদারি দিতে হোমের চারপাশে বসানো হয় উন্নতমানের একাধিক সিসিটিভিও। এমন পরিস্থিতিতেও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হোমের দেওয়ালে সুড়ঙ্গ করে আট আবাসিক বন্দির পালানোর ঘটনায় যথেষ্টই শোরগোল পড়েছে। যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন খোদ হোম কর্তৃপক্ষ। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে সেখানকার নজরদারি। যদিও এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানাগেছে, শুভায়ন হোমের দ্বিতলে একটি ঘরে রাখা হয়েছিল বাংলাদেশি ওই সাত কিশোর সহ ভারতীয় এক কিশোরকে। সিসিটিভির নজরদারিকে এড়িয়ে রাতের অন্ধকারে ওই ঘরের দেওয়ালেই সুড়ঙ্গ কেটে পালানোর পথ করে নেয় আট কিশোর। এদিন সকালে শূন্য ঘরে দেখেই বিষয়টি বুঝতে পারে হোম কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরেই বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে হোমের তরফে। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র জানিয়েছেন, পলাতক কিশোরদের মধ্যে সাত জন বাংলাদেশি। একজন দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।