আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২৯ ডিসেম্বর: চা-শিল্প,পর্যটন, লোকসংস্কৃতির বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা হবে।চা-পাতার গুনমান আর বৃদ্ধি করে তাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। পর্যটন বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পাঠক্রমে যুবকদের হাতে কাজ তুলে দেবার পথ দেখাবে বিশ্ববিদ্যালয়। জনজাতির বৈচিত্র্য, তাদের লোকসংস্কৃতিকে নিয়ে চলবে গবেষণা। নবগঠিত আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিজের দায়িত্ব গ্রহনের পর প্রথমবার সাংবাদিকদের কাছে এমনটাই জানালেন মহেন্দ্রনাথ রায়। সোমবার আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত শুভেচ্ছার বন্যায় ভেষে যান তিনি। সেই সঙ্গে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকলো আলিপুরদুয়ার।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দেশে প্রথমবার কোনও রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ কোনও বিশ্বাবিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। উপাচার্য জানান,”খুব দ্রুত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের কাজ শুরু করবো। আপাতত ফ্যাকাল্টি কতজন রয়েছেন, কোন বিভাগের পরিকাঠামো কেমন তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি। মুখ্যসচিবে সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা হয়েছে। আশা করছি অল্প কয়েকটি বিষয় নিয়ে এই শিক্ষাবর্ষেই ক্লাস শুরু হবে।”
তিনি বলেন,”চা-তে প্রচুর উপকারি যৌগ রাসায়নিক রয়েছে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা চা পাতার রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি ইনফিউশান সেন্টার তৈরি করতে চাই আমরা।চা-য়ের গুনমান বারানোর গবেষণা হবে। উত্তরবঙ্গের লোক সংস্কৃতিকে গভীরে গিয়ে বুঝতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবিড় গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করতে চাই।”

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১লা অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে প্রকান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে পাঁচিল নির্মাণের কাজ শেষ। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা আলিপুরদুয়ার মহাবিদ্যালয়ের গভের্নিং বডির সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইতিমধ্যেই ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। একটি ছয়তলা এবং একটি চারতলা ভবন তৈরি হবে। আলিপুরদুয়ার তথা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য প্রতিফলিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনে। তেমনই নক্সা রয়েছে। আজ থেকেই আলিপুরদুয়ার কলেজের গভর্নিং বডি অবলুপ্ত হল। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আলিপুরদুয়ার জেলার শিক্ষার উন্নয়নে বড় ভূমিকা নেবে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।”
প্রথমদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার থেকে রাজবংশী সমাজে পরিচিত বংশীবদন বর্মন। নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন,”আমরা তিনজনের নাম উপাচার্য হিসেবে প্রস্তাব করে পাঠিয়েছিলাম।তবে এক নম্বরে ছিলেন আমাদের বর্তমান উপাচার্য। তবে উনি তিন নম্বরে যিনি ছিলেন তাকে উপাচার্য করতে চেয়েছিলেন। আমাদের ভাবাবেগকে মর্যাদা দিতে চাননি তিনি।আজ গর্বের দিন।” এদিনই উপাচার্য আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখেন।

