রাজেন রায়, কলকাতা, ৭ জানুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীরতনের সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যাওয়াকে স্বাগত জানালেও পরবর্তী সময়ে তাঁর আচার-আচরণ এবং ফেসবুক পোস্ট জল্পনার পারদ বাড়াচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। যতটা আশা করে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন ততটা তিনি কাজের সুযোগ পাননি, এমন কথা তিনি আগেই জানিয়েছিলেন ঘনিষ্ঠ মহলে। তবে বারবার জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও কোনও নেতা-মন্ত্রী বা শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নাম করে কোনও অভিযোগ আনেননি তিনি। বরং কিছু কথা প্রকাশ্যে না আনাই ভালো বলে আরো জল্পনা বাড়িয়েছেন। এর মধ্যেই জল্পনা বাড়াল তাঁর একটি ফেসবুক পোস্ট। একই সঙ্গে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে তার জবাবে মিলেছে ধোঁয়াশা।
‘প্রকৃত নেতারা শুধু খেলেন না, খেলার সুযোগও করে দেন।’ মহারাজের হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার দিন ফেসবুকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর নিজের খেলার মাঠের একটি অঙ্কন-চিত্র পোস্ট করে এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য লক্ষ্মীর।
উল্লেখ্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত হাওড়া। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। যদিও অরূপ রায়কে সরিয়ে হাওড়া জেলা নেতৃত্বের গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল লক্ষ্মীকে। কিন্তু দায়িত্ব পেয়েও তিনি কোনও কাজ করতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ থেকেই দলীয় কর্মসূচি থেকে ধীরে-ধীরে নিজেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছিলেন লক্ষ্মী। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূলের অন্যতম প্রধান নেতা অরূপ রায়। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, শাসকদল তৃণমূলকেই নাম না করে নিশানা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন এই মন্ত্রী। তৃণমূলে থাকাকালীন কাজ করতে না পারার ‘যন্ত্রণা’ থেকেই সম্ভবত লক্ষ্মীর এই পোস্ট। এমনকি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কাকে দেখতে চান সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরেও সরাসরি জবাব দেননি লক্ষী। তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাকে দেখতে চান? জবাবে লক্ষ্মী বলেন, ‘আমার পরিবারের শুভেচ্ছা সবার সঙ্গেই থাকবে৷’ লক্ষণীয়ভাবে এ ক্ষেত্রে মমতার নাম উল্লেখ করেননি সদ্য মন্ত্রিত্ব এবং তৃণমূল জেলা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া লক্ষ্মী৷ লক্ষ্মীরতন অবশ্য এ দিনও দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্ক রয়েছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাও থাকবে৷
লক্ষ্মীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাকে দেখতে চান তিনি? জবাবে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে লক্ষ্মী বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী বেছে নিয়েছিলেন৷ সবাই জানে, কর্ম অনুযায়ী ফল পাওয়া যায়৷ যে যেমন কাজ করবে, মানুষ সেই মতো ভোট দেবে৷ আমার এবং আমার পরিবারের শুভেচ্ছা সবার সঙ্গেই থাকবে৷’