আশিস মণ্ডল, বীরভূম, ২৬ জানুয়ারি: এ যেন মেঘ না চাইতেই জল পাওয়া। কেননা তিনি জীবনে অনেক কিছু চেয়েছিলেন কিন্তু সেটা আর পেয়ে ওঠা হয়নি। অবশেষে না চাইতেই পাওয়ার মতোই অতর্কিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল বেলায় একটি ফোন আসে; আর সেই ফোনে জানানো হয় ‘আপনি পদ্মশ্রী সম্মান পাচ্ছেন।’ তবে,ফোনটি প্রথমে ধরেছিলেন ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের স্রষ্টা রতন কাহারের ছেলে। তবে ফোনে এটুকু জানার পর আর কিছু জিজ্ঞেস করেননি তিনি। কেননা তিনি তো তখন ‘থ’। কেননা অবিশ্বাসনীয় এবং অকল্পনীয় ঘটনা ঘটেছিল সেই মুহূর্তে।
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই বছর মোট ৩৪ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করার জন্য। এই ৩৪ জনের মধ্যে জায়গা পেয়েছেন বীরভূমের ভাদু লোক সংগীত গায়ক রতন কাহার। রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমের বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের সীমা নেই। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সর্বত্র তার নামের জয়জয় কার। অনেকেই বলছেন অবশেষে তিনি জীবনের সন্ধিক্ষণে এসে যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন।
৮৮ বছর বয়সী রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়ার জন্য নির্বাচিত করার পর রতন কাহার আমাদের জানিয়েছেন, “আমি খুব আনন্দিত, আমি খুব গর্বিত।” এর পাশাপাশি এমন সম্মান পাওয়ার আগে তিনি যে সাধারণ কিছু মানুষ ছাড়া সেই ভাবে কারো কাছে সম্মান পাননি সেই বিষয়টিও ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন। রতন কাহারের জীবনে পদ্মশ্রী সম্মান নতুন এক অধ্যায় তৈরি করল বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনেরা।
রতন কাহার একজন ভাদু, টুসু, আলকাব, ঝুমুরের মতো গান নিয়ে সংগীত রচনা এবং পরিবেশন করে থাকেন। তবে তাঁর জীবনে সবচেয়ে বড় আলোচনার গানটি হল ‘বড়লোকের বিটি লো’। এই গান নিয়ে চরম বিতর্ক রয়েছে। এমনকি এই গান নিয়ে বছর কয়েক আগে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন র্যাপ সিঙ্গার বাদশা। তিনি রতন কাহারের অনুমতি ছাড়াই এই গান ব্যবহার করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিষয়টি তার কানে গেলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং রতন কাহারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন।

