বিচিত্র যুক্তি প্রাক্তন বিচারপতির! দেশে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ার জন্য বেকারত্ব দায়ি

আমাদের ভারত,১ অক্টোবর: ধর্ষণ বাড়ার কারণ হিসেবে অদ্ভুত ব্যাখ্যা দিলেন প্রাক্তন বিচারপতি। বেকারত্বের জন্য সময়মতো বিয়ে হচ্ছে না পুরুষের। আর সেই জন্যেই যৌন চাহিদা মিটছে না তাদের। আর তার ফলেই বাড়ছে ধর্ষণের মত ঘটনা। হ্যাঁ এই অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কেন্ডেয় কার্টজু।

সাধারণত আর পাঁচটা মানুষ যেভাবে কোন ঘটনাকে বিশ্লেষণ করেন এই প্রাক্তন বিচারপতি সেইভাবে বিশ্লেষণ করেন না যে তা আগেও দেখা গেছে। বিভিন্ন প্রসঙ্গ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তার ভাবনা একবারেই অন্য। তবে হ্যাঁ ভাবনার স্বাধীনতা তো সবার রয়েছে। কিন্তু ধর্ষণ বৃদ্ধি নিয়ে কার্টজু যে ব্যাখ্যা করেছেন তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের হাথরসের দলিত কন্যার ধর্ষণ নিয়ে এই মুহূর্তে গোটা দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। কিন্তু ঠিক সেই সময় হাথরাসের ঘটনার সূত্র ধরে ধর্ষণ বৃদ্ধির এক বিচিত্র ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি।

কার্টজু লিখেছেন, দেশে ধর্ষণ বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ বেকারত্ব বৃদ্ধি। তিনি বলেছেন, যৌনতা পুরুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সময় মতো বিয়ে করে পুরুষ তার চাহিদা মেটায়। কিন্তু বেকারত্বের কারণে পুরুষের পক্ষে সঠিক সময়ে বিয়ে করা সম্ভব হচ্ছে না। আর যৌনতার সেই ঘাটতি মেটাতে সে ধর্ষণের মতো অপরাধ করছে।

যৌনতাকে পুরুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হিসেবে উল্লেখ করে কার্টজু আরোও বলেছেন, একটা সময় বলা হতো খাওয়া-দাওয়ার পর পুরুষের পরবর্তী প্রয়োজনীয়তা যৌনতা। ভারতের মতো রক্ষণশীল সমাজে সাধারণত বিয়ের মাধ্যমে একজন যৌন মিলন করতে পারে। কিন্তু বেকারত্ব ব্যাপক হারে বাড়ার কারণে বৃহত্তর সংখ্যক যুবক যৌনতা’ থেকে বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। অথচ একটা বয়সে পৌঁছানোর পর এটা স্বাভাবিক চাহিদা।

কার্টজু বলেছেন “আমি আরোও একবার একটা পরিষ্কার কথা বলতে চাই, আমি ধর্ষণকে ন্যায় সঙ্গত বলছি না। বরং এর নিন্দা করছি। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বলছি ধর্ষণ বাড়তে বাধ্য। তাই সত্যি যদি আমাদের ধর্ষণ কমাতে চাই তাহলে এমন একটা সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যার মধ্যে দিয়ে বেকারত্ব আর থাকবে না বা থাকলেও খুব কম।”

ধর্ষণ বৃদ্ধির এই ব্যাখ্যায় অনেকেই ক্ষুব্ধ। তার এই অদ্ভুত ভাবনার জন্য তাকে বিরূপ সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ঘটনা ঘিরে এই বিতর্ক উঠেছে তাহলে উত্তর প্রদেশের এক দলিত তরুণীর উপর ধর্ষণের ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের সাথে চাষের খেতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ওই তরুণী। পড়ে বিধ্বস্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। সারা শরীরে ছিল অত্যাচারের দগদগে ক্ষত। ঘাড় শিড়দাড়া ভাঙা, অসাড় হয়ে গিয়েছিল দেহের একটা অংশ। অপরাধীদের সম্পর্কে যাতে বয়ান ওই তরুণী না দিতে পারে তার জন্য তরুণীর জিভ পর্যন্ত কেটে নিয়েছিল ধর্ষকরা। অভিযোগ প্রথমে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করেছিল তারা। তারপর তরুনীর প্রতিরোধের মুখে জিভ কেটে অভিযুক্তরা পালায়। ঘটনার পর তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, মঙ্গলবার সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *