আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২৭ জুন: সন্ধ্যায় বৈঠক। তারপরেই ফুটপাত উচ্ছেদের মাইকিং। আর সকাল হতেই সিপিএম প্রভাবিত ওয়ার্ডে বুলডোজার দিয়ে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ শুরু করল বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসন। ২৪ ঘণ্টার সময় না দিয়ে বেছে বেছে বিরোধী ওয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে প্রশাসন। উচ্ছেদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের কাছে ঘাড়ধাক্কা খেলেন রামপুরহাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের সঞ্জীব মল্লিক।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বীরভূম জেলা জুড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে সিউড়ি, রামপুরহাট ও বোলপুরে। বৃহস্পতিবার সাতসকালে রামপুরহাটে ছয়ফুঁকোর পশ্চিম দিকে বুলডোজার নিয়ে অভিযান শুরু করে প্রশাসন। অনেকেই বিছানা থেকে উঠে দোকান খুলতে গিয়ে দেখেন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দোকান। এরপরেই এলাকায় আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। বাড়ির মহিলাদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়।
ব্যবসায়ী চাঁদু খান বলেন, “আমরা সরকারি জায়গায় ব্যবসা করছিলাম। সরকার তাদের জায়গার দখল নেবে এটাতে আমার দুঃখ নেই। কিন্তু সময় না দিয়ে যেভাবে আমার দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট করল তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাছাড়া রামপুরহাট শহরের দেশবন্ধু রোড, আদালত চত্বরে টি পি বন্দ্যোপাধ্যায় রোড, ভাঁড়শালা রোড, ব্যাঙ্ক রোড, ডাকবাংলা পাড়া, হাসপাতালের সামনে রাস্তা সংকুচিত হলেও প্রশাসন নির্বিকার। আগে সেগুলো ভাঙ্গা হোক। রামপুরহাট মহকুমা শাসকের অফিসের সামনের জবর দখলকারীদের আগে উচ্ছেদ করা হোক। কিন্তু সেটা না করে প্রথমেই আমাদের উচ্ছেদ করা হল।”
ব্যবসায়ী আতেমা বিবি বলেন, “ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু এভাবে দোকান গুঁড়িয়ে দেবে ভাবতেই পারিনি। এখন আমরা কিভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না”
এদিকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে এদিন রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় সিটু। তাদের দাবি এই সরকার অমানবিক, হিংস্র। কাউকে সময় না দিয়ে দোকান উচ্ছেদে নেমেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের দাবি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দিতে হবে। এই দাবিতে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।”