সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে মাদুর দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করল রামপুরহাটের দীনবন্ধু ক্লাব

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৪ নভেম্বর: একটা সময় কয়েকজন যুবক কালী পুজো শুরু করেছিলেন রামপুরহাট ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চালধোয়ানি পুকুর পাড়ে। দীনবন্ধু ক্লাবের ব্যানারে সেই পুজোয় এবার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে পা দিল। সে সময়ের উদ্যোক্তাদের অনেকেই আজ আর নেই। তবে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম আজও পুজো টিকিয়ে রেখে নজির সৃষ্টি করেছে।
সালটা ১৯৭১। সে সময় ব্যবসায়ী শম্ভু পোদ্দার, শঙ্কর মণ্ডল, প্রদীপ দাসদের মতো কয়েকজন যুবক চালধোয়ানি পাড়ায় কালী পুজো শুরু করেন। সে সময় রামপুরহাট শহরে চারটি পুজোয় থিমের প্রতিযোগিতা হত। সেই পুজো দেখতে রামপুরহাট শহরের মানুষ ভিড় জমাতেন। কিন্তু সময়ের কালে উদ্যোক্তাদের কয়েকজন মারা যান। তবে পুজো বন্ধ হয়ে যায়নি। কমেছিল পুজোর জৌলুস। পরবর্তী প্রজন্ম পুজো টিকিয়ে রেখে গুটি গুটি পায়ে ৫০ বছরে পা দিল এবার। পুজোর বয়স হলেও ফের ফিরে এসেছে পুরনো জৌলুস। এবার তাদের থিম হারিয়ে যেতে বসা মাদুর শিল্প। প্ল্যাস্টিকের দাপটে ঘাসের তৈরি মাদুর আর বাড়িতে তেমন দেখা যায় না। সেই হারিয়ে যেতে বসা মাদুর দিয়েই তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। রয়েছে টেরাকোটা শিল্পের কারুকার্য। প্রায় ১২ ফুট সাবেকি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক বাদশা পোদ্দার বলেন, “আমাদের বাবা-জ্যাঠারা পুজো শুরু করেছিলেন। সেই পুজো পঞ্চাশ বছর টানতে পেরে ভালো লাগছে। এবার আমরা মাদুর দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেছি। কারন মাদুর দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই আমরা ফিরিয়ে এনে মাদুর শিল্পের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম। সেই সঙ্গে মাদুর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের পুজোর বাজেট সাড়ে চার লক্ষ টাকা”। পুজো কমিটির সভাপতি শুভাশিস সরকার, কোষাধ্যক্ষ সৈকত মিশ্র, সদস্য বিপ্লব নাগরা বলেন, “পুজো চারদিন আমরা কয়েকটি সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। তার মধ্যে রয়েছে রক্তদান শিবির, দুঃস্থদের কম্বল প্রদান, কোভিড যোদ্ধাদের সম্মাননা এবং বাচ্চাদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। তবে কোভিডের কারনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবার বাতিল করা হয়েছে”। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *