আমাদের ভারত, ২১ মে: জলপাইগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশনে একদল দুষ্কৃতি হামলা চালিয়েছে বলে খবর। এরপরই এই ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছে বিজেপি। গত শনিবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের কামারপুকুরে সভা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম এবং ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি রাজনীতি করছেন। আর বিজেপির অভিযোগ, মমতার এই বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা হয়েছে। পঞ্চম দফার ভোটের দিন বাংলার প্রচারে এসে এই বিষয়ে তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রামকৃষ্ণ মিশনের জলপাইগুড়ি শাখায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দাবি করা হয়েছে, শনিবার গভীর রাতে ৩০ থেকে ৩৫ জন লোক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েছিল মিশনের ভেতর। সেখানে বেশ কয়েকজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। সিসিটিভি নষ্ট করে। বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক মন্তব্যের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
পদ্ম নেতা অমিত মালব্য সরাসরি এই ঘটনাকে তালিমানি হামলা বলে আক্রমণ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতা লিখেছেন, এটাই হয়তো বাংলার সবথেকে নিকৃষ্টতম কাজ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ইসকনকে খোলা মঞ্চ থেকে হুমকি দেওয়ার পরেই দুষ্কৃতীরা বন্দুক, ছুরি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে প্রবেশ করেছিল। তারা সাধুদের উপর হামলা চালায়। এটা তালিবানি জমানার থেকে কিছু কম নয়।
শিলিগুড়ির সেবক রোডের চার মাইলে প্রায় ২ একর জমির উপর এই মঠ রয়েছে। সেবক হাউস নামে এটি পরিচিত। এটি জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের অধীনে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক ব্যক্তি জমি দান করেছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনকে। পরবর্তীতে এই জমির মালিকানা নিয়ে মামলা হলেও, আদালত মিশনের পক্ষেই রায় দিয়েছে। সম্প্রতি এখানে একটি স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করেছে মিশন। কিন্তু কয়েক কোটি টাকা দামের ওই জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে জমি মাফিয়ারা। শনিবার গভীর রাতে তারাই সেবক হাউসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
সোমবার রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল, হিন্দু সন্তদের হুমকি দিচ্ছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে তৃণমূলের গুন্ডাদের সাহস বেড়ে যাচ্ছে। মোদীর কথায় রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয়। আমার জীবনেও রামকৃষ্ণ মিশনের অত্যন্ত বড় ভূমিকা আছে। বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে এভাবে হুমকি দেওয়া হবে ভাবতে পারে না দেশবাসী।
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছিলেন তা নস্যাৎ করেছেন কার্তিক মহারাজও। কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে মমতা দাবি করেছিলেন, তিনি ভোটের সময় তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেননি। এমনকি মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার পেছনেও তার হাত ছিল। কিন্তু কার্তিক মহারাজের দাবি, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের তাবেদারি করেন না। তাই এমন অভিযোগ করার আগে প্রমাণ দিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছেন তিনি। না হলে আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।