আমাদের ভারত, ২৭ মে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ইসকন সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে আবারও মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটি বিতর্কিত মন্তব্য সামনে এসেছে। বিজেপির তরফে সেই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। এক নির্বাচনী জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গেছে রামায়ণ, মহাভারত, কোরান, বাইবেল শেষ হয়ে যাবে, তাও আমার কাহিনী ফুরাবে না। আর তার এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পদ্ম নেতারা। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন।
তিনি লিখেছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃঢ়ভাবে বলছেন যে রামায়ণ, মহাভারত, বাইবেল, কোরান একদিন শেষ হয়ে যাবে। এটা অকল্পনীয় যে রাজনৈতিক কোন নেত্রী কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের শ্রদ্ধেয় গ্রন্থগুলির বিলুপ্তি কামনা করছেন।
বিজেপি বার বার অভিযোগ করে মুসলিমদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটব্যাঙ্ক ছাড়া কিছু মনে করে না। এবার তাদের সেই দাবিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিতর্কিত মন্তব্য দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন অমিত মালব্য। তিনি লিখেছেন, “হিন্দু বিশ্বাস এবং ধর্মগ্রন্থের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘৃণার ব্যাপারে সকলেই পরিচিত কিন্তু এই বিবৃতি কেবল সংখ্যালঘুদের প্রতি মমতা ব্যানার্জির বিদ্বেষ নয়, তার ভণ্ডামিও তুলে ধরে। তিনি মুসলিম ভোট চান কিন্তু নিরবে চান কোরানের বিলুপ্তি”
বিজেপি নেতা দাবি করেছেন, “এক মুসলিম সাংবাদিকের এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করলে কলকাতা পুলিশ তাকে আটক করেছে। এর থেকে এটি স্পষ্ট যে, টিএমসি ভোটের জন্য মুসলমানদের ব্যবহার করে এবং তার উদ্দেশ্য পূরণ হলে তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিতে কখনো দ্বিধাবোধ করবে না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পর ভুলবশত কথা বলে ফেলেছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু কেন মুখ্যমন্ত্রীর বদলে ফিরহাদ ক্ষমা চাইলেন তারও প্রতিবাদ করেছেন অমিত মালব্য। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত ধর্মের অনুগামীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে শুধুমাত্র মুসলমানদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ফিরহাদ হাকিমকে বেছে নিয়েছেন। ফিরহাদ হাকিম স্বীকার করেছেন একথা মমতা ব্যানার্জি বলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন ক্ষমা চাইছেন না? কেন তার প্রতিনিধি একা মুসলমানদের কাছে ক্ষমা চাইছেন? নির্লজ্জ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার মুসলিম ভোট এবং কেন্দ্রীয় তহবিল ছাড়া আর কিছুই পছন্দ করেন না। ২০১৯ সালে তিনি মুসলমানদের দুধেল গাই বলেছিলেন, কারণ তারা তাকে ভোট দিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি আরো কঠোর হিন্দু বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। অতি সম্প্রতি দিনে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আক্রমণ করেছেন।”
এই প্রসঙ্গে মোদীর তুলনা টেনে অমিত মালব্য লিখেছেন, “যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্তর্ভুক্তি মূলক উন্নয়নের কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট পেতে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে বিভক্ত করতে পছন্দ করেন। তবে শীঘ্রই সব সম্প্রদায়ের মানুষ তার বিপক্ষে ভোট দেবে।”