আমাদের ভারত,১৮ নভেম্বর: সোমবার থেকে শুরু হল রাজ্যসভার ২৫০ তম অধিবেশন। এই অধিবেশনে “ভারতীয় রাজনীতিতে রাজ্যসভার ভূমিকা ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা” বিষয়ের উপর বিতর্কে অংশ নেবেন সাংসদরা। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে এই বিষয়টির উপর বিতর্ক নিছক আলোচনা নাকি রাজ্যসভার ক্ষমতা কমানোর ভাবনাচিন্তা করছে মোদী সরকার? কারণ মোদী সরকারের লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও নেই রাজ্যসভায়। আর এই কারণে বিল পাশ করাতে গিয়ে একাধিক বাধার সম্মুখীন হয়েছে প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকার।
মোদীর মন্ত্রী বারবার বলেছেন মানুষের সরাসরি ভোটে আসা জয়ী সাংসদদের পাশ করানো বিল রাজ্যসভা কখনো আটকে দিতে পারে না। তাহলে কি সেই ভাবনা থেকেই সোমবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের অন্যতম বিষয় ভারতের রাজনীতিতে রাজ্যসভার ভূমিকা ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা”
এবার রাজ্য সভার ২৫০ তম অধিবেশন। কিন্তু রাজ্যসভার ভূমিকা সংস্কারের প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে এবার বিতর্ক হবে লোকসভায়। রাজ্যের বিধায়কদের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গড়া রাজ্যসভার আদৌ কোন প্রয়োজন রয়েছে কি না তা নিয়ে সংবিধান পরিষদের বিতর্ক হয়েছিল।
নেহেরুর নেতৃত্বে তৈরি কেন্দ্রীয় সংবিধান কমিটি রাজ্যসভা গঠনের সুপারিশ করে। সেই কমিটিতে ছিলেন সংবিধানের প্রণেতা বি আর আম্বেদকর। একমাত্র অর্থবিল ছাড়ার লোকসভায় পাশ হওয়া যে কোন বিল সংশোধন করার জন্য ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা দেওয়া হয় রাজ্যসভাকে।
এর ফলেই মোদী সরকারের আনা অনেকগুলি বিল হোঁচট খেয়েছে পাস হওয়ার আগে। বেশকিছুর ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে অর্ডিন্যান্স। ফলে এই পরিস্থিতিতে বিতর্কের বিষয়টি দেখে প্রশ্ন উঠেছে আদৌ কি এটি আলোচনার জন্যই সীমাবদ্ধ? নাকি রাজ্যসভার ক্ষমতা কমানোর কথা ভাবছে মোদী সরকার।
রাজ্যসভার ভূমিকার নিয়ে একটি অংশের মত হলো, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি লোকসভার সিদ্ধান্ত রাজ্যসভার খারিজ করে দেওয়াটা অগণতান্ত্রিক। অপরদিকে অন্য একটি মত হলে ভারসাম্য রক্ষার জন্য অবশ্যই রাজ্যসভার প্রয়োজন। রাজ্যসভায় মোট আসন ২৪৫। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২৩ জন সাংসদ।সম্প্রতি শরিক এবং মনোনীতদের সঙ্গে নিয়ে রাজ্যসভায় প্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছুঁয়ে ফেলেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ।
রাজ্যসভার ২৫০ তম অধিবেশন উপলক্ষে একটি আড়াইশো টাকার রূপোর মুদ্রা, ডাকটিকিট ও দুটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়।