আমাদের ভারত, ২১ জানুয়ারি: এই নিয়ে তিন জন মন্ত্রী রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করলেন। এর মধ্যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেন্দুর পথের পথিক হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। কারণ পদত্যাগের পর প্রকাশ্যেই নিজের ক্ষোভের কথা জানালেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার নিজের ক্ষোভের কথা বলতে গিয়ে আবেগেও ভাসলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি বললেন সতীর্থ হিসেবে যে সৌজন্য তিনি আশা করছিলেন সেটুকুও তিনি পাননি। তার দপ্তর বদলের খবর তিনি জানতে পেরেছেন টিভি থেকে।
তৃণমূল বারবারই দাবি করছে দুর্নীতির কালো দাগ গা থেকে মুছে ফেলতেই দলবদল করছেন নেতারা। কিন্তু হাওড়ার দুই নেতা লক্ষ্মীরতন শুক্লা ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে এই দাবি কোনভাবে খাটে না। কারণ এরা দুজনেই এখনো পর্যন্ত রাজনীতিতে তাদের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন। যদিও দুজনের একজনও বিজেপিতে যাচ্ছেন বলে এখনো পর্যন্ত ঘোষণা করেননি। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি তাতে বিজেপিতে যোগদান করার সম্ভাবনা কোনভাবেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
বেশ কিছুদিন ধরেই ইঙ্গিত মিলেছিল, বেসুরো ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক লাইভে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পর জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কা সত্যি করেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন রাজীব। কিন্তু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার মুহূর্তে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেঁদে ফেলেছেন। তিনি বলেন, “আমার মনে অনেক চাপা ক্ষোভ ছিল,অনেক অভিমান ছিল সেগুলো একদিনে হয়নি। আপনারা অনেকেই জানেন আমি আড়াই বছর আগেই এই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়েছিলাম। কাজের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে যদি কেউ ছাপ ফেলে সেটাই তার জন্য বড় কথা। কেউ চিরকাল একই দপ্তরের মন্ত্রী থাকে না। আমিও থাকবো বলে আশা করিনি। তবে আমার মন্ত্রিত্ব বদল করা হলো আমাকে কিছু না জানিয়েই। এক্ষেত্রে সতীর্থ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে আমি সৌজন্যে টুকুই আশা করেছিলাম। আমাকে অন্তত জানানো হবে দপ্তর বদল এর কথা এটা আশা করেছিলাম। আমি টিভিতে দেখে জানতে পেরেছিলাম সেচ থেকে সরিয়ে আমাকে বনদপ্তর এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
রাজীব বলেন মন্ত্রী হিসেবে মানুষের কাজ করতে পেরেছি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি তৃণমূল নেত্রী কে বারবার ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী কে ধন্যবাদ জানাই আমাকে দীর্ঘদিন মন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কি কাজ করেছি মানুষ তার বিচার করবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমার জীবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান অনস্বীকার্য। ওর কাছে আমার আজীবন কৃতজ্ঞতা থাকবে।”