আমাদের ভারত, শিলিগুড়ি, ২৮ আগস্ট: করোনার ধাক্কায় মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুটি ট্রেন যাত্রা। প্রথমে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চালু। তারপর আজ আলিপুরদুয়ার গামী ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় পর্যটনে বাড়তি অক্সিজেনের পাওয়া গেলো।
এই দুটো ট্রেনের মূল আকর্ষণ ভিস্তা ডোম কোচ। অর্থাৎ কাচে মোড়া কোচের মধ্যে দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা। আলিপুরদুয়ার গামী ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেনটি সপ্তায় তিনদিন–শুক্র, শনি এবং রবিবার চলবে। শাল-সেগুনের জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া এই ট্রেনে চড়ার জন্য ব্যাপক উন্মাদনা পর্যটকদের মধ্যে। কারণ নিউজলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার যাওয়ার পথে জঙ্গলে দেখা পাওয়া যেতে পারে হাতি, হরিণ, বাইসন কিংবা লেপার্ডের। আর ময়ুর সহ নানান প্রজাতির পাখি তো রয়েছেই। আজ প্রথম পর্যটক বোঝাই ট্রেনটি যাত্রা শুরু করল।
বহরমপুর থেকে এসেছেন সুস্মিতা ঘোষ। তিনি প্রথম দিনেই চড়ার জন্য আলিপুরদুয়ার গামী ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেনের টিকিট কেটেছেন। তিনি বললেন, স্বপ্ন সত্যি হলো। এই ট্রেন চড়ার জন্য বুকিং চালু হতেই টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। আর চড়ার জন্য কাল রাতেই শিলিগুড়ি চলে এসেছিলাম। আরও এক পর্যটক ভিক্টর হালদার বললেন, দারুণ উদ্যোগ রেলের। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার যে সুযোগ তারা করে দিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। সুযোগ পেলে আবার চড়ব।
এদিকে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও করেছে রেল। যাত্রা শুরুর পর চালসা স্টেশনে আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে ট্রেনটিকে স্বাগত জানানো হয়। এছাড়াও আরও দু একটি স্টেশনে একই ব্যবস্থা থাকবে। সেখান থেকেও ২৬জন যাত্রী ট্রেনে চড়েন। তাদের মধ্যে অমিত দাস, রিতা দাসরা জানালেন, প্রথমদিন চড়ব বলেই টিকিট কাটা। আবার এই ট্রেনেই ফিরে আসব। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার এই সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করতে চাই না।
এই ট্রেন পর্যটন শিল্পে জোয়ার আনবে বলে আশাবাদী ট্যুর অপারেটররা। এবিষয়ে ট্যুর অপারেটর সন্দীপন ঘোষ জানান, রেলের এই পদক্ষেপে আমরা দারুণ খুশী। করোনায় আমাদের সকলের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এবার এই ট্রেনের মাধ্যমেই আবার পর্যটনে জোয়ার আসবে। এটাকে জনপ্রিয় করে তুলতে আমরা রেলের পাশে আছি।
সাড়া ফেলে দেওয়া এই ভিস্তা ডোম ট্যুরিস্ট স্পেশাল ট্রেন নিয়ে আশাবাদী রেলও। এদিন নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম শুভেন্দ্র কুমার চৌধুরী ও আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম দিলীপ সিং দুজনেই বললেন, ট্রেনটিকে আরও জনপ্রিয় করার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা আমরা করব। এখনই আগামী সপ্তাহের টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে। আশাবাদী আরও এক সপ্তাহের টিকিট রবিবারই বুক হয়ে যাবে। রাজ্যের বাইরে থেকেও আমাদের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছে পর্যটকরা এই ট্রেনের বিষয়ে। আগামীতে এই ট্রেনই পর্যটনের নতুন পথ দেখাবে।