শারীরিকভাবে নিগ্রহের আশঙ্কা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সাময়িক বন্ধ করে দিচ্ছেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য

আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৯ আগস্ট: এবার বিপদের আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সাময়িক বন্ধ করে দিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি সংবাদমাধ্যমে জানান, আচার্য তাঁকে উপাচার্যের অস্থায়ী দায়িত্ব দিয়েছেন। রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নন। আপাতত বাড়ি থেকে কাজ করছেন তিনি।

শুভ্রকমলবাবু ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস’কে ইমেইল করেও তা জানিয়ে দিয়েছেন। কারণ হিসেবে অবশ্য তৃণমূল সমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়নের বিভিন্ন সময় অপমান’কেই দায়ী করছেন উপাচার্য। শুধু তাই নয় শারীরিকভাবে নিগ্রহের আশঙ্কাও করছেন শুভ্র কমল মুখোপাধ্যায়।

চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমি শুক্রবার পর্যন্ত ক্যাম্পাসে গেছি। এর আগে যা পরিস্থিতি হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে না যে আমি বিশ্ববিদ্যালয় গেলে সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারব। প্রায় প্রত্যেকদিন কর্মচারীরা দল বেঁধে আমার ঘরে ঢুকছেন এবং যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করছেন।“

উপাচার্যের অভিযোগ, “বারবার তারা আমাকে বলছে কেন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আপনি দেখা করছেন না? শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আমার কি আছে? আমি রাজ্যপালকে নিয়োগ পত্র নেওয়ার সময় জানিয়ে দিয়েছিলাম, আমি কোনও পারিশ্রমিক নেব না। আমি একটা সামাজিক পরিষেবা দেব। আমি যা শুনেছি ওরা আমাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করবে।”

উপাচার্য বলেন, “আমি মদ্যপান করি না। কিন্তু ওরা অভিযোগ করছে, আমি নাকি অফিসকক্ষে বসে মদ্যপান করি। শুভ্রকমল না বলে কেষ্টকমল বলে ধ্বনী দিতে থাকে। সঙ্গে নানা অশ্রাব্য কথা। যা করছে ওরা, কোনও ভদ্রলোক মেনে নিতে পারবেন না। আচার্য সব শুনে অবাক। তাঁর সম্মতি নিয়ে আমি রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর আবেদন করেছি।

গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির বৈঠকে ওদের কিছু দাবিদাওয়া ওরা পাস করিয়ে নিতে চেয়েছিল। আমাকে পরে শারীরিক হেনস্থা করার মতলবও ছিল বলে খবর পেয়েছি। গাড়ির সামনে বসে বিক্ষোভ দেখায় ওরা। পুলিশে খবর দিই। সাদা পোষাকের পুলিশ ছিল। অন্যথায় আমি হয়ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বার হতে পারতাম না।

গত ৭ জুলাই কর্নাটক হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল। তাঁর নিয়োগের আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ছিলেন নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তী। তাঁর মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর প্রায় দু’মাস বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন ছিল। ফলে নানা সমস্যা হচ্ছিল।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক অশান্তি হওয়ায় ভোটের তিন দিন আগে রাজভবনের তরফে শুভ্রকমলবাবুর নেতৃত্বে ‘শান্তি ও সামাজিক সংহতি কমিটি’ গঠন করেন রাজ্যপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *