আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৫ সেপ্টেম্বর: অন্তঃসত্ত্বা সোনালী বিবিকে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্ত করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। একই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সোনালী বিবির পরিবারকে। আইনের মাধ্যমেই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে দাবি করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, বীরভূমের মুরারই ২ নম্বর ব্লকের পাইকর গ্রামের বাসিন্দা সুইটি বিবি এবং সোনালী বিবির পরিবার কয়েক বছর ধরেই কর্মসূত্রে স্বামী ও নাবালক ছেলেদের নিয়ে দিল্লিতে থাকতেন। তারা অস্থায়ী ভাবে দিল্লিতে থাকতেন। কাগজ কুড়িয়ে চলত তাদের সংসার। ২৪ জুন তাদের গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। দু’দিন বাদেই ২৬ জুন তাদের বাংলাদেশ পুশব্যাক করে দিল্লি পুলিশ। সুইটি বিবির দুই নাবালক ছেলে এবং সোনালী বিবির নাবালক ছেলে সহ তার স্বামীকে বাংলাদেশ পাঠায় দিল্লি পুলিশ। এনিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়
রাজ্যজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্যই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এনিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। একই সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিক পর্ষদেও তাদের ফিরিয়ে আনার আবেদন করা হয়। এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে ছিলেন সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি সোমবার পাইকরে গিয়ে দুই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সামিরুল ইসলাম বলেন, “সোনালী বিবি অন্তঃসত্ত্বা। তার এক নাবালক ছেলে এবং স্বামীকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। একইভাবে সুইটি বিবিকে দুই নাবালকের সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। তারা এখন বাংলাদেশের জেলে রয়েছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। খুব শীঘ্রই তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সুইটি বিবি এবং সোনালী বিবিরা যতক্ষণ ফিরে না আসছে ততক্ষণ আমরা পাশে থাকব। আদালত কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছে কেন তাদের এতো তাড়াতাড়ি পুশব্যাক করা হল? আদালত জানতে চেয়েছে পুশব্যাক করার আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ওদের পরিচয় জানতে চেয়েছিল কিনা। দিল্লি পুলিশ অন্যায়ভাবে তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এদের ক্ষেত্রে আইনত জটিলতা থাকায় ফিরিয়ে আনতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা আইনের মাধ্যমে সর্বশক্তি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে আনব।”
সুইটি বিবির মা নাজিরা বিবি বলেন, “আমরা পেটের তাগিদে দিল্লিতে থাকতাম। সেখানে কাগজ কুড়িয়ে সংসার চালাতাম। মেয়ের স্বামী নেই, ফলে দুই নাতিকে নিয়ে থাকতাম সেখানেই। মাস তিনেক আগে দুই নাতি ও মেয়েকে দিল্লি পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আমরা গরিব মানুষ ফলে টাকা পয়সা খরচ করে ছাড়িয়ে আনার ক্ষমতা আমার নেই। তবে সাংসদ সামিরুল ইসলাম আমার মেয়ে ও নাতিদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। এখন দেখার কবে তারা ফিরে আসে।”