মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁস ও টোকাটুকি রুখতে বজ্র আঁটুনি পুরুলিয়ায়

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ২২ ফেব্রুয়ারি: মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে পর্ষদের নির্দেশ মেনে চুড়ান্ত প্রস্তুতি দেখা গেল পুরুলিয়ায়। প্রশ্ন ফাঁস ও টোকাটুকি রুখতে বজ্র আঁটুনি করা হয়েছে পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে। সেখানে নূন্যতম তিনটি করে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কোনও কোনও মূল পরীক্ষা কেন্দ্রে ৭ থেকে ৮টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের মনিটরিং করার জন্য একটি সেল থাকছে। কেন্দ্রে কোনও ভাবে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকা যাবে না। পুলিশের সাহায্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূরের পরীক্ষার্থীরা যাতে সময় মতো কেন্দ্রে পৌঁছোয় এবং বাড়ি ফিরে যায় তার জন্য পর্যাপ্ত বাস চলাচল করবে। এবার জেলায় পরীক্ষার্থী গত বারের চেয়ে প্রায় ৪৭ শতাংশ কম রয়েছে। এর কারণ যে স্কুল ছুট নয়, তা পরিষ্কার জানিয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক গৌতম চন্দ্র মাল বলেন, “২০১৭ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সের মানদণ্ড কার্যকর হয়। তখনই ছাত্র ছাত্রীরা বয়স কমের কারণে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পায়নি। সেই ব্যাচ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। স্বভাবত সংখ্যা অনেকটাই কম রয়েছে এবার।”

জেলায় মোট পরীক্ষার্থী গত বার যেখানে ৫৫৭০০ জন ছিল সেখানে ২৬৪৭৮ জন কমে গিয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯২২৩ জন। এবার পরীক্ষাকেন্দ্রও কমেছে। কেন্দ্রের সংখ্যা ১১৯ টি। যার মধ্যে মূল পরীক্ষা কেন্দ্র ৫২ টি, অতিরিক্ত ৬৭টি। অতীতে বিভিন্ন পরিস্থিতির নিরিখে জেলায় স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এবার তা হয়নি৷ সব পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারজুড়ে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে মেডিক্যাল ক্যাম্প থাকবে। জেলা সদর হাসপাতাল সহ ব্লক স্তরের প্রতিটি হাসপাতালে অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এবার মোবাইল সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারবেন না পরিদর্শকরাও। পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন সেন্টার ইন-চার্জ। সেই দায়িত্বে মূলত সার্কেলের স্কুল ইন্সপেক্টররা আছেন। অতিরিক্ত ভেন্যুর ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের লাইন ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের নজরদারির দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারাও মোবাইল সাথে নিয়ে আসতে পারবেন না। পরীক্ষা পরিচালনার কাজে জড়িত আধিকারিক, পর্ষদ প্রতিনিধি ছাড়া বাকি সবার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। খুব জরুরি কারণ ছাড়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছুটি এখন বাতিল করা হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরুলিয়া শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন ব্লক সদরে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ভারি যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ রাখা হবে। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে চলবে বাড়তি সরকারি বাস।

পরীক্ষা পরিচালনায় দায়িত্বে রয়েছেন জেলা আহবায়ক সত্যকিংকর মাহাত। তিনি বলেন, “নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা শেষ হবে বলে আশা করি। এবার স্পর্শকাতর কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়নি। জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *