সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৯ সেপ্টেম্বর: পুরুলিয়ার স্বর্ণ বিপণীর ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হল আরও একজন দুষ্কৃতী। ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার সুদামডি থেকে দ্বিতীয়জনকে গতকাল গ্রেফতার করা হয় বলে জানালেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ ব্যানার্জি। ধৃতের নাম করণ জিৎ সিং সিধু ওরফে কোমল। তার বাড়িও সুদামডিতে। তাকে আজ পুরুলিয়া জেলা আদালতে হাজির করা হয়। ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয় তার। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এর মূল মাথাকে চিহ্নিত করা এবং বাকি দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য তল্লাশি চালানো হবে বলে পুলিশ সুপার জানান। এই নিয়ে দুই জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিল্লি থেকে আগেই বিকাশ কুমার নামে বিহারের বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
গত ২৯ আগস্ট পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়া এলাকায় একটি সোনার দোকানে গ্রাহক সেজে প্রথমে ২জন দুষ্কৃতী ভেতরে ঢোকে। একটি সোনার সামগ্রী পছন্দ করার পর পানীয় জল খাওয়ার নাম করে দোকানের বাইরে বের হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৫জনকে সঙ্গে নিয়ে ভেতরে ঢোকে তারা। তারপরেই রক্ষীদের বেঁধে, কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে ব্যাপক লুটপাট করে মোটর সাইকেলে করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। যাওয়ার আগে সোনার দোকানে থাকা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সঙ্গে করে নিয়ে যায়। শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। কর্তৃপক্ষের দাবি, দুষ্কৃতীরা প্রায় ৮কোটি টাকার সোনা ও হীরের গয়না লুট করে। পুলিশ ঘটনাস্থলের এসে পাশে থাকা দোকানের সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে চিহ্নিত করে দুষ্কৃতীদের। গত ৪ সেপ্টেম্বর দিল্লির সালাপুর ক্ষেরার শিব মন্দির এলাকা থেকে বিকাশ কুমার নামে এক দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ি বিহারের নালন্দা জেলার নানউয়ার গ্রামে। সে এই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা দিয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তাকে দিল্লির আদালতে তোলা হলে ৭২ ঘণ্টার ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসে পুরুলিয়ায়। বুধবার তাকে জেলা আদালতে তোলা হয়েছিল। ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। তারপরই আসে এই সাফল্য।
পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে রানাঘাটের ঘটনার এবং এখানকার ঘটনার একজনই মাস্টার মাইন্ড রয়েছে। এছাড়া এখানে ৭ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র সহ ওই বিপণিতে ডাকাতি করতে আসে। তার মধ্যে ধৃত করণজিৎ একজন। পুরুলিয়া থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের একটি জায়গায় অস্থায়ী আস্তানা গেড়েছিল। ২০ আগস্ট থেকে লক্ষ্য পূরণে এখানে একাধিকবার এসে রেইকি করত। গোটা পরিকল্পনার ছক সংশোধনাগারে বসেই কষে থাকে অধরা মাস্টার মাইন্ড। তার ডান হাত হিসেবে এক দুষ্কৃতী এই ঘটনার নেতৃত্ব দিচ্ছিল। কিছু জিনিস উদ্ধার হয়েছে। তবে, এই গ্যাং সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। সুচারুভাবে দলের এক একজন সদস্য দায়িত্ব নিয়ে নিজের কাজ করে।