আমাদের ভারত, ১৪ সেপ্টেম্বর: ভোট বড় বালাই। একুশের ভোটের মাত্র ছমাস আগে গরিব পুরোহিত কিংবা দরিদ্র সনাতনী ব্রাহ্মণ, সারা বছর যারা খুব বেশি পুজো পান না আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন, তাদেরকে এবার থেকে পুরোহিত ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল রাজ্যের তৃণমূল সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “এরকম ৮ হাজার পুরোহিতের তালিকা আমরা পেয়েছি তাদের মাসে হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যাদের বাড়ি নেই তাদের বাংলা আবাস যোজনায় বাড়িও দেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের রাজ্যে যারা ইমাম আছেন বা মোয়াজ্জেম আছেন তাদের নিয়ে অনেকে বড় বড় কথা বলেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা গরীব পুরোহিত অনেকেই আমাদের কাছে সমস্যার কথা বলেছেন। সেই সব কথা মাথায় রেখেই আমরা হাজার টাকা করে মাসে তাদেরকেও ভাতা দেবো। একই সঙ্গে যাদের বাড়ি নেই তাদের বাড়ি বানিয়ে দেবে বাংলা আবাস যোজনায়।”পুজোর আগেই যাতে পুরোহিত ভাতা শুরু করা যেতে পারে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি মুখ্য সচিবকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”সনাতন ধর্মের অনেকেই অনুরোধ করেছেন তাদের জন্য তীর্থস্থান করে দেওয়ার জন্য। আমরা তা গড়তে কোলাঘাটের জমিকে চিহ্নিত করেছি।” একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আজ হিন্দি দিবস বাংলা মাতৃভাষা হল বাঙালিরা সমস্ত ভাষাকে সম্মান করেন। এখানে কোন ভাষাকে অবজ্ঞা করা হয় না। তিনি বলেন,”আমরা ২০১১ সালেই একটি হিন্দি অ্যাকাডেমি গ্রুপ গঠন করেছিলাম। হিন্দি একাডেমি কমিটিও গঠন করছি। এছাড়া দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকার মতুয়া ডেভলপমেন্ট বোর্ড গঠন করেছে।”
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রাচীন উপজাতির ভাষা ও সংস্কৃতির কথা লেখা যে ৩০০০ পান্ডুলিপি বিষ্ণুপুরের জাদুঘরের রয়েছে তার ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলার প্রাচীন ধর্মস্থান ও হেরিটেজের ম্যাপিং করা হবে। ম্যাপিং এর পর সরকার যদি মনে করে তাহলে কোন ধর্মস্থানকে হেরিটেজ হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্রহণ করবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর ইমাম ভাতা চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই পদক্ষেপকে সংখ্যালঘু তোষণ বলে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন বিরোধীরা। এবার একুশের ভোটের মাত্র ৬ মাস আগে পুরোহিত ভাতা চালু করলেন। ফলে এই সিদ্ধান্তকে রাজনীতি ও ভোটের সঙ্গেই জুড়ে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছে। সম্ভবত তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এই সিদ্ধান্ত। কারণ লোকসভা ভোটের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেই বলেছিলেন “টোটালটা হিন্দু মুসলমান হয়ে গেছে”। তাই এবার আবার ভোটব্যঙ্কের চিন্তা থেকেই সংখ্যাগুরুদের বার্তা দিতে এই পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।