সাথী দাস, পুরুলিয়া, ২৬ জুন: মন ভালো ছিল না নিহত তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর। সকাল থেকে সারা দিন ভোট গ্রহণের দলীয় বুথে থেকে তদারকি করছিলেন তিনি। সঙ্গীদের সঙ্গে বসেই মাঝে মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসছিল তাঁর কাছে। তার চোখ মুখ বলে দিচ্ছিল স্বামীর কথা ভাবছিলেন তিনি।
ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এই উপ নির্বাচন কাম্য ছিল না। তাঁর প্রশ্ন এর কী খুব প্রয়োজন ছিল। একটা মানুষকে নির্মম হত্যা করে উপ নির্বাচন! হত্যার কারণে সহানুভূতির ভোট তিনি চাইছিলেন না। তবে, এর প্রতিবাদ ভোট বাক্সে পড়ুক তিনি চাইছিলেন। ঝালদা উপ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও স্বামীর খুনের কিনারা হয়নি এখনও। এর মধ্যেই তাঁর মৃত্যুতে উপ নির্বাচন পর্ব চলছে। ফলাফল নিয়ে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী পূর্ণিমা।
ইভিএম ভর্তি হয়েছে তপন কান্দুর খুনের প্রতিবাদে। দাবি পূর্ণিমার। তিনি শুধু নন ঝালদার অধিকাংশ বাসিন্দাই চাইছিলেন ভাইপো মিঠুন ভোটে দাঁড়িয়ে কাকার খুনের প্রতিবাদ করুক। ২৯ জুন ভোটের ফলাফল জানা যাবে। কিন্তু পরিতৃপ্ত কী হবেন নিহত তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা? এর উত্তরে তিনি বললেন, “সিবিআইয়ের তদন্তের ৯০ দিন পেরিয়েছে ঠিকই তারা আরও তিন মাস সময় চেয়েছে। ওই সময়ের মধ্যেই মূল খুনিরা শুধু নয়, ষড়যন্ত্রকারিরাও ধরা পড়বে এবং শাস্তি পাবে।” হাইকোর্টের নির্দেশে তপন খুনের তদন্তভার পেয়েছে সিবিআই। ৮৮ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। সেখানে চার্জশিটে গ্রেফতার হওয়া ৫ জন অভিযুক্তকেই এই খুনের ঘটনার ষড়যন্ত্র করার কথা বলা হয়েছে। অভিযুক্তদের হাতে চার্জশিটের কপি তুলে দেওয়া হয়। তবে মূল অভিযুক্ত ২ শুটারকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই। আদালতের কাছে তাদের গ্রেফতার করে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ ঝালদা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হন। গত ৪ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। ৬ তারিখ নিজেদের হাতে মামলা নেয় সিবিআই। সিটের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৪ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। তারপর মাত্র ১জন (সত্যবান প্রামানিককে) গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল শুটার যাদের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে সেই ২ শুটারকে গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই। এই খুন যে পারিবারিক বিবাদের জন্যই ঘটেছে তা উল্লেখ রয়েছে।