আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২৫ আগস্ট: প্রজাপতিদের স্বর্গদান বলে পরিচিত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প।বিশেষজ্ঞমহলের দাবি, কমবেশি ৫৫০-র বেশি প্রজাতির প্রজাপতির অস্তিত্ব ধরা পরে বাঘ বনের ভেতর। এবার ৪০৮টি প্রজাতির ছবি সহ মলাটবন্দি করে একটি বই আকারে প্রকাশ করল বক্সা বনবিভাগ। উদ্দেশ্য মূলত দুটি।প্রথমত, প্রজাপতি সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি করা। দুই, বই বিক্রির অর্থ বক্সা টাইগার রিজার্ভ কনজারভেশন ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের মাধ্যমে বনবাসী এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করা।
‘বাটারফ্লাই অফ বক্সা টাইগার রিজার্ভ’ বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে উদ্বোধন করেছিলেন বনমন্ত্রী রাজিব ব্যানার্জি। এরপর ছাপার কাজ শেষ হয়ে জুন মাসের শেষে হাতে পেলেও সম্প্রতি সর্বসাধারনের জন্য বিক্রি শুরু হয়েছে। এক্কেবারে শুরুতেই প্রকৃতি প্রেমিকদের একটি অংশের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়েছে বইটি। মোট ৪০৮টি প্রজাতির প্রজাপতির সচিত্র বর্ণনা রয়েছে। যার মধ্যে ৭-৮টি প্রজাতি এমন রয়েছে যা এক্কেবারেই অতিবিরল। যার মধ্যে টেইল রেভরিনথ, গ্রিন ফ্ল্যাস, ব্যান্ডেড রয়্যাল-এর মত বিরল প্রজাতি স্থান পেয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ইতিপূর্বে প্রজাপতি বিষয়ে ছোট আকারে কিছু বই প্রকাশিত হলেও এই বইটি সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। কোনও কোনও মহলের মতে রাজ্যে প্রথম কোনও জঙ্গল কেন্দ্রিক এমন বর্ননামূলক বই প্রকাশিত হল। শুধু তাই নয়, বক্সার অন্যতম জনপ্রিয় রাজাভাতখাওয়া বাটারফ্লাই পার্ক থেকেও প্রায় ১১০টি প্রজাতি উঠে এসেছে বইটিতে। জানা গেছে, বক্সার আধিকারিকদের সাথে নেচার মেটস নামক একটি সংস্থার প্রজাপতি বিশেষজ্ঞদের একটি দল একযোগে একটানা প্রায় ৬ বছর ধরে বক্সার জঙ্গল পর্যবেক্ষণ করে এই ৪০৮টি প্রজাপতির সন্ধান পেয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত জানান,”বক্সা টাইগার রিজার্ভে বিভিন্ন গবেষণা চলছে।প্রজাপতি তার মধ্যে একটা। আমরা ইতিমধ্যেই বাটারফ্লাই পার্ক তৈরি করেছি। এই বইটি প্রকৃতি প্রেমিকদের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করবে বলে আশা করছি।” বনদফতরের তরফে জানা গেছে, বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৫০০টাকা। বনদফতরের ফিল্ড ডিরেকটারের অফিস, রাজাভাতখাওয়া প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে, বাটারফ্লাই পার্কে গেলেই এই বইটি সংগ্রহ করতে পারবেন পর্যটকরা। বিশেষজ্ঞদের কথায় বড় বন্যপ্রাণী মানুষকে বরাবর আকর্ষন করে। তবে পাখি ও প্রজাপতি না থাকলে পরিবেশের অস্তিত্ব থাকবে না। পাখি ও প্রজাপতির এক আশ্চর্য অবস্থান দেখা যায় বক্সাতে, যা খুব একটা দেখা যায় না দেশের বাকি অংশে।উল্লেখ্য, রাজাভাতখাওয়াতে বাটারফ্লাই পার্ক ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। বছরের বেশ কয়েকটি সময়ে নানা রং এবং আকৃতির প্রজাপতির মেলা বসে যায় পার্কে।