সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৩ নভেম্বর: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জেরবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় বহু শিক্ষকের যেমন চকরি গিয়েছে, তেমনই শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তার। ঠিক এমনই সময়ে এই রাজ্যেরই উত্তর ২৪ পরগণার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেনজির আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে মছলন্দপুর রাজবল্লভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রধান শিক্ষকের নাম সিকান্দার রবিদাস। শুধু স্বোচ্চার হওয়াই নয়, বৃহস্পতিবার জেলার স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিনিরা দুর্নীতির তদন্তে স্কুলে গেলে গ্রামবাসী ও অভিভাবকরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। যা নিয়ে এদিন স্কুলে হুলস্থূল পড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে স্কুল ইন্সপেক্টর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার কথা জানালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুলে যোগ দেন সিকান্দার। অভিযোগ, তারপর থেকেই তিনি ছাত্রছাত্রীদের স্কুল ফি এবং মিড-ডে মিলের টাকা আত্মসাৎ করা শুরু করেন। পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ মিড-ডে মিল দিনের পর দিন না খাইয়ে বা নিম্নমানের খাবার খাইয়ে বা ভুয়ো বিল তৈরি করে, সই জাল করে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। তাঁকে কুপ্রস্তাব দেওয়া ও যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলেও এক শিক্ষিকা পরিচালন সমিতির কাছে অভিযোগ জানান।
স্কুলের সভাপতি বলেন, যৌন হেনস্থার অভিযোগ আমরা শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি। টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত উন্নয়ন তহবিলের জন্য যে সাত-আট লক্ষ টাকা সংগৃহীত হয় তার প্রকৃত হিসেব দেখতে চেয়েছি। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, “উন্নয়ন তহবিলের ও মিড-ডে মিলের হিসেব স্পষ্ট নয়। প্রতি মাসে পুষ্টির জন্য যে খাবার দেওয়া হয় তাতেও একটি অ্যাকাউন্টে আড়াই লক্ষ টাকা গরমিল দেখা গিয়েছে। শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা তদন্ত শুরু করেছে। সম্প্রতি কিছু তদন্তে গরমিলের অভিযোগ প্রমাণিতও হয়েছে।”
এদিন জেলার স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিনিরা দুর্নীতির তদন্তে স্কুলে গেলে গ্রামবাসী ও অভিভাবকরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। যা নিয়ে এদিন স্কুলে হুলস্থূল পড়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “২০ লক্ষ টাকা একটা বড় অঙ্ক। জানি না এক বছরের মধ্যে এই বিপুল টাকা আমি কী ভাবে আত্মসাৎ করলাম। বোঝাই যাচ্ছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।” যৌন হেনস্থার অভিযোগও সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি তাঁর।

