Ghatal, Road blockade, বন্যায় ত্রাণ ভিক্ষা নয়, শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কার করে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতীকী পথ অবরোধ

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৭ জুলাই: গত লোকসভা নির্বাচনের পূর্ব থেকেই ফের “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান” সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। আরামবাগের এক প্রশাসনিক সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালের সাংসদকে সামনে রেখে মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ঘোষণার পর প্রায় ১৫ মাস অতিক্রান্ত হলেও পাঁচটি স্লুইসগেট পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু ছাড়া বাস্তবে মাস্টার প্ল্যানের কোনো কাজই শুরু হয়নি। তবে ঐ ঘোষণার অনেক আগেই সেচ দপ্তর তাদের রুটিনমাফিক কাজের মধ্যেই স্লুইস পুনর্নির্মাণের টেন্ডার করেছিল। বর্তমানে সেই কাজ চলছে মাত্র। তাও বর্ষায় বর্তমানে বন্ধ।

অন্যদিকে চন্দ্রেশ্বর খালকে শীলাবতীর সঙ্গে যুক্ত করা, ঘাটাল শহরে পাম্প হাউস নির্মাণ ও শহরে রিটেনিং ওয়াল নির্মাণে বর্তমানে নানা ধরনের বিপত্তি দেখা দিয়েছে। শীলাবতীর নিম্নাংশের ২৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের টেন্ডার হয়েছে সবেমাত্র। ফলস্বরূপ চলতি বর্ষার বৃষ্টিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত শিলাবতী নদী এলাকার চন্দ্রকোনা-গড়বেতা-ঘাটাল প্রভৃতি ব্লকের বিরাট অংশ বিধ্বংসী বন্যার কবলে পড়ে ইতিমধ্যে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অত্যধিক বৃষ্টি হলে বা ব্যারেজ থেকে বেশি পরিমাণ জল ছাড়া হলে ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার হাজার হাজার মানুষ ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হবে।

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক অভিযোগ করে বলেন, বহু প্রতীক্ষিত এই মেগা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো অর্থ বরাদ্দ না করায় রাজ্যই মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করবে, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা সেই সময় উনাকে চিঠি দিয়ে বলেছিলাম, ওই প্রকল্প রূপায়ণে আমাদের কমিটি সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি ‘তদারকি কমিটি’ গঠন করে আলোচনা সাপেক্ষে ধাপে ধাপে প্রকল্পটি দ্রুত রূপায়িত করা হোক। কিন্তু রাজ্য সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে গঠিত তদারকি কমিটিতে আমাদের কমিটির কাউকে রাখা হলো না। শুধু তাই নয়, যখন প্রথমেই দরকার ছিল-শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কার করার, সেই কাজে হাত না দিয়ে যে কাজগুলি ধরা হলো, যেগুলিতে স্থানীয়দের বাধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও কার্যত মাস্টার প্ল্যানের কোন কাজই এখনো শুরু করা গেল না। সেই কারণে বর্ষায় ফের বন্যায় ঘাটালের হাজার হাজার মানুষ বানভাসি হল।

বন্যা ত্রাণের চিড়া-গুড়-ত্রিপলের ভিক্ষা নয়, বর্ষার পরেই শীলাবতী নদীর নিম্নাংশ সংস্কারের কাজের মধ্য দিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ অবিলম্বে শুরুর দাবিতে আজ ৭ জুলাই ঘাটালের বানভাসিরা এক বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হয়ে কলেজ মোড়ে ১৫ মিনিট প্রতীকী পথ অবরোধ করে। মিছিল ও অবরোধে নেতৃত্ব দেন কমিটির সভাপতি ডাঃ বিকাশ চন্দ্র হাজরা, কার্যকরী সভাপতি সত্যসাধন চক্রবর্তী, যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, দেবাশীষ মাইতি ও অফিস সম্পাদক কানাই লাল পাখিরা, কোষাধ্যক্ষ নাড়ুগোপাল দোলুই প্রমুখ।

ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ডের বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে মিছিল কলেজ বাসস্ট্যান্ডের ক্ষুদিরাম পাদদেশে পথ অবরোধের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। মিছিলের শুরু এবং শেষে বক্তব্য রাখেন, নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, দেবাশীষ মাইতি, সত্য সাধন চক্রবর্তী প্রমুখ। কর্মসূচিতে তিন শতাধিক বানভাসি মানুষ যোগ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *