আমাদের ভারত, ২৮ আগস্ট: ধর্ম পালন বা ধর্মরক্ষাই সব ধর্মের উপরে, এমনটাই বললেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর কথায়, এই জ্ঞান দিয়ে বিশ্ব শান্তি রক্ষা করা যায়। পাকিস্তান বা বাংলাদেশের নাম না করেই ভাগবত বলেছেন, যে সব দেশ একদিন ভারতবর্ষেরই অংশ ছিল, বিশেষ করে যারা আমাদের প্রতিবেশী তাদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার বিষয় ভারতকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
সংঘের অতি পরিচিত ও প্রাচীন অখন্ড ভারতের মানচিত্র হল, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তিব্বতকেজুড়ে।
আরএসএসের শতবর্ষ উপলক্ষে তিন দিনের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখছিলেন সংঘ প্রধান। সেখানে তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সু- সম্পর্ক রাখা খুবই জরুরি। আর এই কাজে দরকার হলে ভারতকেই প্রথমে পা বাড়াতে হবে। শতবর্ষ অনুষ্ঠানে সংঘ বেশ কয়েকটি বিদেশী রাষ্ট্রকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার দিনেই সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন রাশিয়া ও চীনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সংঘের তরফে পাকিস্তান বাংলাদেশ ও তুরস্ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
রাজ ধর্ম পালনের বার্তা দিয়ে ভাগবত বলেন, ধর্ম ও সম্প্রদায় দেখে সম্পর্ক তৈরি করা যায় না। এখানে ধর্ম পালন হলো সব ধর্মের ওপরে। ভারতের ধ্যান ধারণা আমাদের সংস্কৃতি এবং আমাদের দর্শন, জ্ঞান- বিজ্ঞান’কে বাইরে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের দিশাকে আরো বিস্তৃত করা দরকার। এই কাজে প্রথম পদক্ষেপটি হলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
তিনি বলেন, আমাদের অধিকাংশ প্রতিবেশী দেশ একদিন ভারতের অংশ ছিল। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বলতে গিয়ে ভাগবত বলেন, আমাদের নদী, পাহাড়, জনবসতি সবই এক। মানচিত্রে শুধু একটি ভাগ করে রাখা হয়েছে। এর কারণ, প্রত্যেকে যাতে নিজের পরম্পরাগত মূল্যবোধ নিয়ে উন্নতির সোপানে চড়তে পারে। আমাদের ধর্ম, সম্প্রদায়, জাতি আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমাদের সংস্কারে কোনো ভিন্নতা নেই।
ভারতের বিশ্ব গুরু হয়ে ওঠার ভাবনা প্রসঙ্গকে সরাসরি তুলে না ধরেও এই বিষয়ে ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করেন তিনি। ভাগবতের মতে, বিশ্বকে বদলানোর চেষ্টা করার আগে কাউকে নিজের ঘরেই পরিবর্তন আনতে হয়। আর এই কাজে প্রথম প্রতিবেশীকেই কাছে টানতে হবে। সংঘ প্রধান বলেন, ভারতের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত যারা আমাদেরই লোক, তাদের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় করা। এই দেশগুলি আলাদা থাকতেই পারে, কিন্তু মূল্যবোধের ভীত, ঐতিহ্য একই। তাই তারা উন্নতি করুক এবং এই কাজে হাত বাড়িয়ে দিক ভারত।
সংঘের শতবর্ষে বিভিন্ন দেশের ৫৫ জন দূত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ১০ জনের বেশি রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং অন্যান্য দূত উপস্থিত ছিলেন।