বাংলাদেশে পুজোয় হামলার প্রকাশ্য প্রতিবাদ চট্টগ্রামের অধ্যাপকের

বিশেষ সংবাদদাতা, আমাদের ভারত, ১৬ অক্টোবর: বাংলাদেশে এবছর পুজোয় হামলার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের অধ্যাপক রাজীব নন্দী। শনিবার রাজীববাবু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “বাংলাদেশে এবছর পূজায় হামলা ভাঙ্গচুর যেমন হয়েছে, তেমনি প্রচুর শিক্ষিত, রুচিশীল সংবেদনশীল মুসলিমরা এর প্রতিবাদও জানিয়েছে। আমার অনেক কলিগ, শিক্ষার্থী তাঁদের উদ্বেগ ও আকুতি প্রকাশ করেছে গত চারদিন। বিষয়টিকে আমি দারুণ একটি পরিবর্তন হিসেবে দেখছি।

ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, এই মুসলিম ভাইয়েরাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। সম্ভবত এখনই সঠিক সময় বাংলাদেশকে একটি ‘উদারনৈতিক অসাম্প্রদায়িক’ রাষ্ট্র গঠনের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করার। আর এই কাজটি করতে হবে সংখ্যাগুরুদেরই। এই দায় আমাদের সকল ভাতৃপ্রতীম মুসলিমদের। আজ যদি আমাদের বুঝদার, ইমানদার মুসলিম ভাইয়েরা ‘নীরব’ থাকেন তবে, আপনাদের শ্রেষ্ঠত্বের গরিমা সংখ্যাগুরুর গুরুভার হিসেবে আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণকে অন্তর্দহনে পরিণত করবে।

এ বছর দুর্গাপূজায় বাংলাদেশে যা ঘটলো তা এক কথায় ‘ভয়ের সংস্কৃতি’। এবছরের ঘটনার কঠোর বিচার হওয়া উচিত। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারহীনতা অব্যাহত থাকলে আগামী বছরগুলোতে পূজা আরো ছোট হবে, পরিসর আরো কমবে। হিন্দুরা ভাবতে বাধ্য হবে, পূজাটা নম নম করে ঘরের কোণায় আসনেও করা যায়। সেটা কি আমাদের প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা চান? যদি না চান, তবে সংখ্যাগুরুর গুরুভার হিসেবে আপনাদেরই আগে নামতে হবে।

কোনো রাষ্ট্র যদি তার নাগরিক- যথাঃ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, আদিবাসী, সংশয়ী, নাস্তিক সকলের নিরাপত্তা দিতে না পারে, সে রাষ্ট্র কোনভাবেই গণতান্ত্রিক নয়। রাষ্ট্র কোনো ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব চাপিয়ে দিতে পারে না। যতদিন শ্রেষ্ঠত্বের গরিমা থাকবে ততদিন রাষ্ট্রে এইরকম নিষ্পেষণ চলবেই। আসুন রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করি। ধর্মীয় শ্রেষ্ঠত্ব নয়, মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম, মহব্বত, দরদ আর সহানুভূতিশীল একটি দেশ চাই আমরা।

ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *