ভর্তুকিতে অস্বীকার! ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার থেকে রাস্তায় নামছে না বেসরকারি বাস

রাজেন রায়, কলকাতা, ২৮ জুন: শহরের গণপরিবহণে গতি আনতে বাস পিছু ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই ভর্তুকিতে কোনও লাভ হচ্ছে না হিসেব কষে দেখিয়ে দিয়ে সোমবার থেকে রাস্তায় বাস না নামানোর সিদ্ধান্ত নিল বাসমালিকদের সংগঠন। রবিবার জয়েন্ট ফোরাম অফ বাস সিন্ডিকেট বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিল, ভাড়া না বাড়ালে ওই অনুদান নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। ফলে সোমবার থেকে রাস্তায় ফের বাস সংকটে ভুগতে চলেছেন মহানগরীর যাত্রীরা।

লকডাউনে লোকসানের খতিয়ান দেখিয়ে বাস মালিকরা বার বার ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আবেদন করলেও প্রথম থেকেই তাতে সায় ছিল না পরিবহণ দফতরের। লকডাউনে জর্জরিত সাধারণ মানুষের ওপর আরও আর্থিক বোঝা চাপাতে চাইছিল না রাজ্য সরকার। সেই কারণে আগামী তিন মাস ১৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি চালক ও কন্ডাক্টরদেরও স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনার কথাও বলেছিলেন।

কিন্তু সরকারের দেওয়া এই প্যাকেজ নিয়ে তাদের কোনও লাভ তো হবে না, উল্টে লোকসানও মিটবে না বলে জানিয়েছে অধিকাংশ বাস মালিক সংগঠন। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাস ভাড়া বাড়াতেই হবে। ভর্তুকি কোনও সমাধান নয়। কম যাত্রী নিয়ে, বাস স্যানিটাইজ করে এই ভর্তুকিতে চালানো সম্ভব নয়। আর কোনও স্থায়ী সমাধান না করে তিন মাস ভর্তুকি ঘোষণায় কোনও লাভই হবে না।’

তপনবাবু জানান, “আমাদের বাস পিছু পাঁচ জন করে কর্মী। তাঁদের টাকা দিয়ে, ৩৪ জন যাত্রী নিয়ে, বাস স্যানিটাইজ করে, পুরোনো ভাড়া জারি রেখে আমরা বাস চালাতে পারব না। তার ওপর পেট্রোল, ডিজেলের দাম রোজ বাড়ছে। রাজ্য সরকারের ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকিতে আমাদের কী হবে? আমরা কী পকেটের পয়সা দিয়ে বাস চালাব?”

বাস মালিকদের তরফে এদিন বলা হয়েছে, পুরনো ভাড়ায় যত সিট তত যাত্রী নিয়ে বাস চালালে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী যে অনুদানের কথা বলেছেন তা হিসাব কষলে দেখা যাবে প্রতি দিন ৫০০ টাকা করে ঘাটতি মিটবে। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে বাকি টাকাটা আসবে কোথা থেকে? আর এভাবে লোকসানের খতিয়ান অারও লম্বা হতেই থাকবে। তাই বাস না চালানোই সবচেয়ে ভাল।
প্রতিদিন ক্ষতির বোঝা মাথায় নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *