পুরনো ভাড়াতেই বৃহস্পতিবার ধাপে ধাপে পথে নামতে চলেছে বেসরকারি বাস

রাজেন রায়, কলকাতা, ৩ জুন: স্নায়ুর লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত সুর নরম করতে বাধ্য হল বাসমালিক সংগঠনগুলি। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে পথে নামতে চলেছে বেসরকারি বাস। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে ধাপে ধাপে তাঁরা বাস নামাতে চলেছেন।

জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এদিন পরিবহণমন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তার উপর ভিত্তি করেই আমরা ধাপে ধাপে বাস পথে নামাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা ৪ দফা দাবি সহ স্মারকলিপি মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণ মন্ত্রীকে দিয়েছিলাম। পুরনো ভাড়ায় বাস চলানো অসম্ভব। আমাদের প্রধান দাবি হল ভাড়া বিন্যাসের জন্য একটি রেগুলেটরি কমিটি গড়তে হবে। যাঁরা ঠিক করে দেবেন বাস ভাড়া কি হবে। এছাড়া কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বিমা, স্যানিটাইজার সামগ্রী যেমন মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভস বাসচালক, কণ্ডাক্টরদের দিতে হবে, বাস কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবহণমন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই আশ্বাসের উপর নির্ভর করে আমরাও যাত্রীদের কষ্ট লাঘবের জন্য বাস পথে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, ভাড়া বাড়ানো সংক্রান্ত বিষয়ে বুধবার মালিকপক্ষ আলোচনায় বসেছিল। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মানুষের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবার ধীরে ধীরে সব রুটে বাস নামাতে হবে। তবে ভাড়া যে বাড়াতেই হবে, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। কত দিনের মধ্যে কত ভাড়া হবে, এ বিষয়টি রেগুলেটরি কমিটির উপরে ছেড়ে দিয়েছেন বাস-মিনিবাস মালিকেরা। ২০ জন করে যাত্রী নিয়ে বাস চালুর অনুমতি মিললেও, বাস প্রাথমিক ভাবে নামাতে নারাজ ছিলেন বাস মালিকরা। ভাড়া বৃদ্ধির পথ থেকে তারা কোনওভাবেই সরে আসতে রাজি ছিলেন না। রাজ্যও কড়া অবস্থান নিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, এই কঠিন পরিস্থিতিতে কোনও মতেই ভাড়া বাড়ানো যাবে না।

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আমরা এ ভাবে করোনার নাম করে ভাড়া বাড়াচ্ছি না। যাতে কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে যে আমরা মানুষের পাশে নেই। নিজেদের স্বার্থে আমরা ভাড়া বৃদ্ধির দাবি তুলেছিলাম। তবে কাল থেকে ধীরে ধীরে বাস নামবে। সরকার রেগুলেটরি কমিটি করেছে। তারা ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত তাদের উপরে ছেড়ে দিচ্ছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *