আমাদের ভারত,২৩ নভেম্বর:নাটক কি এখনো বাকি রয়েছে মহারাষ্ট্রে? সাত সকালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এনসিপির অজিত পাওয়ার। আর শপথ গ্রহণের পরেই উদ্ধবকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন শরদ পাওয়ার। সেখানে তিনিও পাল্টা ঘোষণা করেন উদ্ধবের নেতৃত্বেই সরকার গঠিত হবে মহারাষ্ট্রে। তিনি জানান বিজেপির কাছে সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় সংখ্যার নেই।
এখানেই শেষ নয় দুপুরে শিবসেনা এনসিপি’র যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে দেখা গেল তিনজন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়ককেও। ওই তিনজনকে সাতসকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অজিত পাওয়ারের সঙ্গে রাজভবনে দেখা গিয়েছিল। সাংবাদিক বৈঠকে শরদ পাওয়ার দাবি করেন ১০-১১ জন এনসিপি বিধায়ক সকালে রাজভবনে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে তিনজন বিধায়ক এখানে উপস্থিত আছেন। বিদ্রোহীদের মধ্যে একজন বলেন, “অজিত পাওয়ার আমাদের ঠকিয়েছেন। অজিত আমাদের ফোন করে রাজভবনে যেতে বলেন। আমরা যাই। তখন জানতামই না কি কারণে আমাদের ওখানে যেতে বলা হয়েছিল।”
শরদ পাওয়ার দাবি করেন বিজেপির সঙ্গে এনসিপি’র বিধায়করা হাত মেলেনি। অজিতের সঙ্গে রাজভবনে যাওয়া অন্য আরেক এসপি বিধায়ক জানান, “সাতসকালে রাজ ভবনের সামনে আমরা ১০ জন বিধায়ক অজিত পাওয়ার এর সঙ্গে দেখা করি। পরে জানতে পারি রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হচ্ছে।”
গোটাটাই অজিত পাওয়ার একা করছেন। এনসিপি সকলেই এখনো শিবসেনা এবং কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছেন বলে জানান শরদ। মহারাষ্ট্রের সরকার গড়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী উদ্ধব বলেন, শুধু মহারাষ্ট্রে নয় সারাদেশেই এইভাবে খেলা খেলছে বিজেপি। এটাকে রাজনৈতিক সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছাড়া আর কি বা বলা যায়? সরকার গড়ার জন্য বিধায়ক কেনাবেচা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।
উদ্ধব বলেন, বিজেপি যদি বিধায়কদের নিজেদের দিকে টানতে চায় মহারাষ্ট্রের মানুষ তা মেনে নেবে না। বিজেপিকে চেষ্টা করতে দিন মহারাষ্ট্র চুপ করে থাকবে না।
শারদ পাওয়ার দাবি করেন শুক্রবার শিবসেনা কংগ্রেস এনসিপি বৈঠকে উপস্থিত তাদের দলের বিধায়করা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। সেই চিঠি নিয়ে অজিত পাওয়ার রাজভবনে গিয়েছেন।
তবে অজিত পাওয়ারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে শরদ বলেন, তাকে পরিষদীয় দল নেতার পদ থেকে সরানো হয়েছে । দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শরদ পাওয়ার দাবি করেন ১০-১১ জন বিধায়ক রাজভবনে গেলেও অজিত পাওয়ার ছাড়া এনসিপি’র কোন বিধায়ক শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ছিলেন না। শিবসেনা কংগ্রেসের এনসিপি জোট এখনো অক্ষুণ্ন। তিনি বলেন, যাই হোক না কেন আমরা একজোট হয়ে থাকব। একজোট হয়ে থাকার জন্য যা প্রয়োজন তাই করবো।
শনিবার প্রায় সূর্য উঠার আগেই মহারাষ্ট্রে উঠে যায় রাষ্ট্রপতি শাসন। যা বিজেপি ও অজিত পাওয়ার ছাড়া কেউই জানতেন না। মহারাষ্ট্রের মানুষ শনিবার সকালে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার আগে নতুন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছেন। সঙ্গে নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছেন অজিত পাওয়ারকে। শনিবার সকালের সব সংবাদপত্রের শিরোনামে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। তবুও সেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট অক্ষুন্ন রয়েছে ঘোষণা করেছেন শরদ- উদ্ধব। এবার তাহলে কোন নাটক অপেক্ষা করছে?
প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বাসঘাতক এনসিপির বিধায়করা কি আইনের ফাঁদে পড়বে না? অজিত পাওয়ারের পদ্ম পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার পেছনে শরদের কি সত্যিই কোনো আসকারা নেই? এখন সেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের ভবিষ্যৎ কী? প্রথমবারের জন্য বাল ঠাকরের পরিবার থেকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইতিহাস গড়া থমকে গেল উদ্ধবের। ৩০শে নভেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে ফড়নবিশকে। সেটা হবে তো? প্রশ্নগুলো আবার সেই একই জায়গায় চলে এল, তাহলে নাটক কি এখনো বাকি থেকে গেল?